নির্বিকার ছিল পুলিশ আমতলীতে চাল আটকের পর ছিনিয়ে নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান!

প্রথম পাতা » বরগুনা » নির্বিকার ছিল পুলিশ আমতলীতে চাল আটকের পর ছিনিয়ে নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান!
বৃহস্পতিবার ● ৩০ এপ্রিল ২০২০


---

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ সহায়তার পাঁচ বস্তা চাল  বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া স্কুলের সামনে বৃহস্পতিবার সকালে একটি টমটম থেকে আটক করে স্থানীয় জনতা। চাল আটকের চার ঘন্টা পরে ওই চাল পুলিশের সামনেই ছিনিয়ে নিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা ও তার সহযোগীরা- এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ সহায়তার চাল বুধবার উত্তর তক্তাবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিতরণ করা হয়। ওই চাল থেকে পাঁচ বস্তা চাল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা তার সহযোগী ফুফাতো ভাই পাভেল তালুকদারকে দেয়। পাভেল তালুকদার ওই চালের বস্তা পরিবর্তন করে তার গ্রামের বাড়ীতে রেখে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই চাল টমটমে করে আমতলী নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় লোকজন টমটমে সরকারী চালের বস্তা দেখে সন্দেহ হয়। পরে তারা ওই টমটমটি আটক করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন ও ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদারকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা ও তার লোকজন চাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং যারা চাল আটক করেছে তাদের দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এ সময় পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করেছে।
টমটম চালক রাসেল বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা বুধবার (গতকাল) পাভেল তালুকদারকে পাঁচ বস্তা সরকারী চাল দিয়েছে। ওই চাল পাভেল তালুকদার বস্তা পরিবর্তন করে আমাকে আমতলী তার বাসায় নিয়ে যেতে পাঠায়। আমি চাল নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন চাল ও সরকারী বস্তাসহ ধরে ফেলে।
স্থানীয় শাহজাদা তালুকদার, রাসেদুল হাসান কোয়েল তালুকদার ও লাল মিয়া হাওলাদার বলেন, সরকারী চাল বস্তা পরিবর্তন করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন আটক করেছে। ওই চাল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা তার সহযোগী পাভেল তালুকদারের কাছে বিক্রি করেছে। তারা আরো বলেন, খবর পেয়ে আমতলী থানার এসআই মোঃ শহীদুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে পুলিশের সামনেই ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন চাল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এ সময় পুলিশ নিরব ছিল। আমরা সরকারী চাল আত্মসাৎকারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধার শাস্তি দাবী করছি।
পাভেল তালুকদার বলেন, ছয় জনের নামে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। গতকাল (বুধবার) চাল নিতে না পারায় বৃহস্পতিবার সকালে চাল নিয়ে টমটমে করে আসার সময় স্থানীয় লোকজন আটক করেছে। এই চালগুলো আমাদের নামের। তিনি আরো বলেন, আমি চেয়ারম্যানের ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে। আমরা কার্ডধারী।
আমতলী থানা এসআই মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, ওইখানে কোন চাল ছিল না। খালী খালী পুলিশকে হয়রানী করার জন্য মিথ্যা খবর দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার চেয়ারম্যান যে চাল বিতরণ করতে পারেনি সেই চাল স্থানীয় লোকজন আটক করেছে।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরে পরে কথা হবে বলে ফোনের লাইন কেটে দেন। এরপর তিনি ফোন ধরেননি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীনের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সরকারী চাল ধরা পরেছে এমনটি আমি শুনিনি।

এইচএকে/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ১৪:০৮:৩৪ ● ৩৩৫০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ