বুধবার ● ৭ আগস্ট ২০১৯

ঈদযাত্রা: উন্নতি নেই সিলেট রুটের রেলসেবায়

হোম পেজ » জাতীয় » ঈদযাত্রা: উন্নতি নেই সিলেট রুটের রেলসেবায়
বুধবার ● ৭ আগস্ট ২০১৯


ঈদযাত্রা: উন্নতি নেই সিলেট রুটের রেলসেবায়

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

নিরাপদ ভ্রমণে সড়কপথের চেয়ে ট্রেনেই স্বাচ্ছন্দ্য যাত্রী সাধারণের। তাই ঈদ বা পূজার ছুটিতে ট্রেনই প্রথম পছন্দ থাকে যাত্রীদের। ট্রেনের টিকিট সংগ্রহেও রেলস্টেশনগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু সিট সংকটে অনেকে কষ্ট হলেও স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে হলেও ট্রেনে ভ্রমণ করেন। কেউবা টিকিট না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে সড়কপথে যাত্রা করতে বাধ্য হন। এমন অবস্থা দেখা যায় প্রতি ঈদেই। তারপরও ঈদে যাত্রীসেবায় উন্নতি নেই সিলেট রুটে। বিশেষ ট্রেন বা অতিরিক্ত কোচ সংযোগ নেই। কেবল অদৃশ্য অবহেলায় দৈন্যতা কাটছে না সিলেট রুটে রেলসেবায়।
এই রুটের যাত্রীদের ভাষ্যে, দেশের বিভাগ ও জেলাগুলোতে যেখানে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু হচ্ছে, কোনো কোনো রুটে নতুন ট্রেন ও বিদেশ থেকে আনা কোচ সংযোজন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে; সেখানে ট্রেনে সিলেট রুট দিনের পর দিন অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। নতুন ট্রেন চালু কিংবা নতুন কোচ সংযোজনের উদ্যোগ দূরে থাক, বরাবরের মতো এবারও ঈদে যাত্রীসেবায় বিশেষ ট্রেন নেই সিলেট রুটে। অথচ প্রতি ঈদ-পূজা পার্বনে পর্যটনের রাজধানীখ্যাত এই অঞ্চলে ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে আসেন। কেবল ছুটিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা লোকজনই নয়, সিলেটে বেড়াতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও প্রথম পছন্দ থাকে ট্রেনে ভ্রমণ। কিন্তু একমাত্র আন্তঃনগর পারাবত ছাড়া সিলেট রুটে চলাচল করা সব ট্রেনের কোচগুলো অবস্থা সেকেলেরই থেকে গেছে। আর স্টেশন ঢুকলেই চোখ পড়ে ভাঙা চেয়ারের দিকে। ভাঙাচোরা চেয়ারগুলোই যেন অবহেলার প্রতীক সিলেট রুটের রেলসেবার।
সিলেট-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর কালীন, জয়ন্তিকা, পারাবত, উপবন এবং চট্টগ্রাম রুটে পাহাড়িকা ও উদয়ন ট্রেন চলাচল করছে। এসব ট্রেনগুলো ১৬টি করে কোচ দিয়ে যাত্রা করলেও এখন আরও কমে এসেছে। বর্তমানে ১১টি কোচ নিয়ে ও অন্য সব ট্রেনগুলো ১৪টি করে কোচ নিয়ে চলাচল করছে বলে রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে।
সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আফসার উদ্দিন  বলেন, ঈদে সিলেট রুটে বিশেষ ট্রেন থাকছে না। তবে প্রতিটি ট্রেনে বাড়তি কোচ সংযোজনের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের অনেকে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, অন্য রুটে যেখানে নতুন নতুন ট্রেন চালু হচ্ছে। নতুন করে রাজশাহী রুটে চালু হলো বনলতা এক্সপ্রেস, খুলনা ও পঞ্চগড় রুটে নতুন ট্রেন নামানো হয়েছে। সেসব ট্রেনের মানের দ্বারে কাছেই নেই সিলেট রুটের ট্রেনগুলো। অন্য রুটের ট্রেনের বাদ পড়া নষ্ট কোচগুলো সামান্য মেরামত করে সিলেট রুটের ট্রেনগুলোতে সংযোগ দেওয়া হয়। ফলে নামেই আন্তঃনগর ট্রেন থেকে গেছে সিলেট রুটে।
রুহুল আমিন নামে এক যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, সিলেট পর্যটন নগরী। একটা বিভাগীয় শহর। কিন্তু এই বিভাগের সঙ্গে যুক্ত রেলসেবা দেখলে বোঝা যায়, কতটা অবহেলিত আমরা। আর ঈদে বিশেষ ট্রেন দূরে থাক, বরং ট্রেনগুলো থেকে কোচ আরও কমিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া অব্যবস্থাপনার কারণে এই রুটে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সনাক) সিলেটের সমন্বয়ক ফারুক মাহমুদ  বলেন, কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সিলেট এক অর্থে অভিভাবকশূন্য। যে কারণে কেবল রেল নয়, সার্বিক উন্নয়নে সিলেট পিছিয়ে পড়েছে। তবে সিলেট রুটে অন্তত ট্রেনের নতুন কোচ সংযোগ দিতে সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হবেন বলে আশাবাদী তিনি।
রেল সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সিলেট-ঢাকা রুটে ১৪টি কোচ নিয়ে যাত্রা শুরু করে কালনী এক্সপ্রেস। বর্তমানে ১১ কোচ নিয়ে চলাচল করছে প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের রেখে যাওয়া কালনী এক্সপ্রেস। জয়ন্তিকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস মধ্যখানে কমে ১২টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। পরে অবশ্য আরও চারটি কোচ যুক্ত হলেও আবার দু’টি করে কমিয়ে ১৪টিতে নামানো হয়েছে। একইভাবে ১৬টি কোচ নিয়ে চলাচল করা পারাবত এক্সপ্রেস এখন ১৪টি কোচ নিয়ে চলছে। উদয়ন ও পাহাড়িকার যাত্রা শুরু ১৪টি কোচ নিয়ে। বিগত বছরগুলোতে কমিয়ে দেওয়া হয় ৯টি কোচ। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ডিও লেটারের (চাহিদাপত্র) পরিপ্রেক্ষিতে এই ট্রেনগুলোতে কোচ সংখ্যা এখন ১৬টি করা হলেও ফের দুইটি করে কোচ কেটে নেওয়া হয়েছে।


এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৭:১৪ ● ৪৫৬ বার পঠিত