চরফ্যাশনে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, গ্রেফতার ৫

হোম পেজ » ভোলা » চরফ্যাশনে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, গ্রেফতার ৫
শনিবার ● ১১ মে ২০১৯


প্রতীকী ছবি

চরফ্যাশন সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাসনের নজরুল নগর ইউনিয়নে বজলুবাজার গ্রামবাসীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। বিরোধীয় জমিতে ঘর তোলার কাজে বাঁধা দিতে গিয়ে পুলিশ গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। গ্রামবাসীরা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে মারধর করে। পরে শক্তিবৃদ্ধ করে পুলিশও গ্রামবাসীর উপর চড়াও হয়। উত্তেজিত পুলিশ নির্বিচারে গ্রামের নারী ও শিশুদের প্রকাশ্যে বেদড়ক মারধর করেছে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মোতাহার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ এবং তার কন্যা আরজু বাদী হয়ে ১৫জনকে আসামী করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ মহিউদ্দিন(৩৫) রহমান(১৮) তাছনুর(৫০) জান্নাত৩০) ফাতেমা(৩৫) জনকে আটক করেছেন। তাদেরকে শনিবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। কথা স্বীকার করলেও তারা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শুক্রবার সকালে থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামী বলে পুলিশ জানিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে নজরুল নগর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মোশারফ হোসেন বেপারী বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ আইচা থানার ওসি মাসুম তালুকদার গ্রামবাসীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষের কথা অস্বীকার করে বলেছেন, পুলিশ দায়েরকৃত একটি মামলার আসামীদের গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছেন। তবে চরফ্যাশন সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শেখ সাব্বির হোসেন বলেছেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের   ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর পিিুলশের সাথে গ্রামবাসীর ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে পুলিশের কোন সদস্য আহত হয়নি বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোশারফ হোসেন বেপারী বাড়ির সামনে বিরোধীয় জমিতে ঘর তোলেন জাহাঙ্গীর বেপারী। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে জাহাঙ্গীর বেপারীসহ তার লোকজন পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জাহাঙ্গীরের বোন জান্নাত ও চাচাতো ভাই মহিউদ্দিনকে আটক নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আবারও ঘটনাস্থলে এসে আলমগীর মাঝি নামে গ্রামের জনৈক ব্যক্তিকে আটক করে মারধর করে। এতে গ্রামবাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশকে ঘিরে ফেলে এবং অবরুদ্ধ করে মারধর করে। এসময় সুযোগ পেয়ে আটক আলমগীর মাঝি পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ ও মারধর করার খবর পেয়ে দক্ষিণ আইচা থানার ওসি মাসুম তালুকদারের নেতৃত্বে পুলিশ দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে গ্রামবাসীকে নির্বিচারে মারধর এবং আটক করে। পুলিশ এসময় বৃদ্ধা তাছলিমা ও তার অসুস্থ শিশু ছেলে আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর বেপারীর বোন ফাতেমা এবং প্রতিবেশী ইসমাইলকে আটক করে। পুলিশ বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে আটক নারী ও শিশু নির্বিশেষে আটক ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে বেধকড় মারধর করেছে বলে গ্রামবাসীরা জানান।
ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট জাহাঙ্গীর বেপারী ও গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় ২৩ মাস আগে ফুফা মোতাহার হোসেন থেকে গন্ডা ৮৫ হাজার টাকা দাম নির্ধারন করে ১৬ গন্ডা জমি ক্রয় করে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে সাদা কাগজে লিখিত বায়না চুক্তি করেন জাহাঙ্গীর বেপারী। কিন্ত দীর্ঘদিন ধরে ফুফা মোতাহার হোসেন এই জমি দলিল দিতে কালক্ষেপন করে আসছেন। নিরুপায় হয়ে জাহাঙ্গীর বেপারী চরফ্যাশন সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (সাবেক) মিজানুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু কোন সুরাহা পাননি। পরে গ্রামে সালিশ করা হয়। মোতাহার হোসেন কোন পাত্তা দেননি। নিরুপায় হয়ে শুক্রবার জাহাঙ্গীর বেপারী বায়না সূত্রে ক্রয়কৃত জমিতে ঘর তোলার চেষ্টা করেন। এসময় মোতাহার হোসেন পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পুলিশ অতিউৎসাহী হয়ে ঘটনাস্থলে নির্বিচারে গ্রামবাসীর উপর চড়াও হয়। পুলিশ নিরাপরাদ সালিশদার আলমগীর মাঝিকে আটক ও মারধর করলে গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পরেন।
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি মাসুম তালুকদার পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের কথা অস্বীকার করেছেন। ওসি বলছেন, জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে জনৈক মোতাহার হোসেনের দায়েরকৃত মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল বলে ওসি জানান। চরফ্যান সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার শেখ সাব্বির হোসেন বলেছেন, জমি সংক্রন্ত বিরোধের ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর পিিুলশের সাথে গ্রামবাসীর ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে পুলিশের কোন সদস্য আহত হয়নি বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আসামী ৫জনকে শনিবারে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:২৮:৩৬ ● ৬১৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ