
সোমবার ● ১৮ আগস্ট ২০২৫
ছাতকে সাত সন্তানের ঘরে রাতে ইউএনও!
হোম পেজ » সর্বশেষ » ছাতকে সাত সন্তানের ঘরে রাতে ইউএনও!সাগরকন্যা প্রতিবেদক, ছাতক (সুনামগঞ্জ)
স্বামীহারা আফিয়া বেগমের চরম দুর্দশার খবর পেয়ে রাতে ছুটে যান ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম। রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে জাউয়া বাজার ইউনিয়নের বড়কাপন মাঝপাড়া গ্রামে গিয়ে তিনি ওই পরিবারের হাতে পাঁচ ব্যাগ খাদ্যসামগ্রী, দুই বান্ডেল টিন ও নগদ অর্থ তুলে দেন। এরফলে আফিয়া বেগমের পরিবার একটু ভালভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন বলে স্থানীয়রা মনে করছেন, ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা ইউএনওকে।
এসব বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন জাউয়া বাজার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক, ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস সুমন ও আলমগীর হোসেন, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রবীণ রঞ্জন পুরকায়স্থসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্রাম পুলিশবৃন্দ।
আফিয়া বেগম ওই এলাকার দিনমজুর লোকমান আলীর স্ত্রী। সাত সন্তানের এই পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে লোকমান আলী সহায়-সম্বল বিক্রি করে মালয়েশিয়া যান। দেশে ফিরে দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০২৪ সালে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসায় ঋণ করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। স্বামীর মৃত্যুতে সাত সন্তান ও বৃদ্ধা শাশুড়ির ভরণপোষণের ভারে দিশেহারা হয়ে পড়েন আফিয়া। জীবিকার তাগিদে সম্প্রতি দুই মেয়েকে ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজে পাঠাতে বাধ্য হন। প্রতিবেশীরা সহায়তা করলেও এত বড় পরিবারের জন্য তা ছিল অপ্রতুল।
আফিয়া বেগম সাগরকন্যাকে বলেন, এক বেলা খেলে তিন বেলা উপোস থাকতে হয়; জরাজীর্ণ ঘরে বৃষ্টির পানি পড়ে, দরজা নেই, কাপড় টানিয়ে কোনোভাবে আবরু রক্ষা করতে হয়। তিনি বলেন, ইউএনও না এলে সেদিন রাতেও তাদের না খেয়ে থাকতে হতো।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন, ইউএনও শুধু প্রশাসক নন, মানবিকতার প্রতীক। তার এই উদ্যোগ সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, মানুষের কষ্টে পাশে থাকা একজন প্রশাসকের মৌলিক দায়িত্ব; এটিকে তিনি দায়িত্বের পাশাপাশি মানবিক কর্তব্য হিসেবে দেখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:১৩:৪৯ ● ৯৬ বার পঠিত