গৌরনদীতে মানহীন উপকরণে তৈরি হচ্ছে সেমাই-চানাচুর!

হোম পেজ » বরিশাল » গৌরনদীতে মানহীন উপকরণে তৈরি হচ্ছে সেমাই-চানাচুর!
শনিবার ● ৩১ মে ২০২৫


গৌরনদীতে মানহীন উপকরণে তৈরি হচ্ছে সেমাই-চানাচুর!

গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আসন্ন ঈদুল আযহা সামনে রেখে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় টরকী বন্দর ছাগল হাটের কাছে বেবি ফুড প্রডাক্টস নামের একটি কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে নি¤œমানের উপাদান সামগ্রী ব্যবহার করে লাচ্ছা সেমাই ও চানাচুর তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি, শ্রম আইন অমান্য করে কম বেতনে ২ জন শিশু শ্রমিক দিয়ে কারখানায় উৎপাদন কাজ করানোর অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ ২ জন শিশু শ্রমিকসহ ৮ শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন কাজ চালিয়ে আসছে। কারখানার মেঝেতে সেমাই তৈরির কাঁচামাল পড়ে আছে। সেগুলোর উপর ধুলাবালি  ও মাছির উপদ্রব দেখা যায়। কোথাও কোনো স্যানিটেশন নেই। কারখানার শ্রমিকদের হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক, এমনকি সুরক্ষিত পোশাকও পরানো হয়নি। ফলে প্রতিটি খাদ্যপণ্যের ভেতরেই যেন লুকিয়ে আছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর সাব্বিরকে দেখা যায় গরম তেলের কড়াইয়ে চানাচুর ভাজতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক  শ্রমিক জানান, এখানে নিয়মিতই ২ শিশুকে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সেমাই ও চানাচুর তৈরির কাজ করানো হচ্ছে। প্রতি দিন ১০/১২ ঘণ্টা কাজ করলে মালিক পক্ষ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মজুরি দিয়ে আসছে। এটি বাংলাদেশ শ্রম আইন এবং আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদের সরাসরি লঙ্ঘন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চানাচুর তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে নি¤œমানের বাদাম, ক্ষতিকর রং ও রাসায়নিক সংরক্ষণকারী। এসব উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হলেও, পণ্যের মোড়কে উৎপাদন ও মেয়াদ সংক্রান্ত তথ্য দেয়া হচ্ছে ইচ্ছেমতো বিনা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায়। বিএসটিআই’র কোনো অনুমোদন ছাড়াই প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে গৌরনদীসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আগে কারখানার সেমাই-চানাচুর কিনতাম। এখন দেখে খেতে ভয় লাগে। খাবার বানানোর পরিবেশ দেখে মনে হয় এগুলো খেলে অসুস্থ হওয়া সময়ের ব্যাপার।
এ ব্যাপারে কারখানার মালিক কৃষ্ণ পালের ছেলে পলাশ পাল বলেন, আপনি যা লেখার লিখতে পারেন। প্রতি বছর আমার কারখানা নিয়ে দু-চারটা নিউজ হয়। ইউএনও থেকে শুরু করে থানার ওসিসহ বরিশালের সবাই জানে আমার কারখানার কথা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরী বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। কোনো খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান যদি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদন করে এবং শিশুশ্রম ব্যবহার করে, তা শ্রম আইন ও জনস্বাস্থ্য বিধিমালার চরম লঙ্ঘন। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

এএসআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩২:৫৮ ● ৫২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ