
শুক্রবার ● ১৯ আগস্ট ২০২২
ছাতকে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
হোম পেজ » ব্রেকিং নিউজ » ছাতকে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবনছাতক(সুনামগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
প্রচন্ড গরম বৃষ্টিহীন আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ এলেও ভারী বৃষ্টির দেখা নেই ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ । অনাবৃষ্টি, প্রচণ্ড গরম বিপর্যস্ত জনজীবন। ভুক্তভোগি গ্রাহকরা বারবার পল্লীবিদুৎ কর্তৃপক্ষকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লোডশেডিং দেয়ার জন্য অনুরোধ করলেও তারা তা মানতে রাজি হয়নি। দিন রাতে ১১- ১২ ঘন্টা লোডশেডিং তো আছেই; তার ওপর বিরক্তিকর ভেলকিবাজি। সবচেয়ে বিরক্তিকর গভীর রাতে এলাকাবাসী যখন ঘুমাতে যান ঠিক সে সময়ে শুরু হয় আসল লোডশেডিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে কোথায় কতক্ষণ কীভাবে লোডশেডিং দেয়া যাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় রুটিন প্রস্তুত করে তা জনগণকে জানিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ জোনাল পল্লী বিদুৎ অফিসের কর্মকতা কমচারি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে ইচ্ছামাফিক লোডশেডিং দিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে বলে অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে মানুষ বিদ্যুতের ওপর ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এক মুহূর্ত ও বিদ্যুৎ ছাড়া অতিবাহিত করা বড় দায়। অথচ বিদ্যুৎ নিয়ে কখনো কখনো লুকোচুরি খেলা হয়, কখনো করা হয় তামাশা। বিদ্যুতের অভাবে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না। সেক্ষেত্রে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। অধিকাংশ সময়ে দেখা যায় রাত ১টা থেকে লোডশেডিং শুরু হয়ে একটানা চলে দীর্ঘ একঘন্টা থেকে দুই ঘন্টা পর্যন্ত। একদিকে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস অন্যদিকে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ। সারা রাত ঘুমাতে না পেরে এলাকাবাসীর লোকজন সড়কের উপর আর ব্রিজ কালভার্টেও ওপর বসে গল্প গুজব করেই রাত পার করছেন । রাত্রিকালীন সমান তালে লোডশেডিং দেয়ার কারণে সাধারণ মানুষ সকালে নির্ঘুম রজনীর হতাশা প্রকাশ করে। তাছাড়া আসন্ন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনার মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিসে
দোয়ারাবাজার,জাউয়াবাজার,দোলারবাজার,আলীগঞ্জ,মঈনপুর বাজার,বরাটুকা বাজার এলাকা রাত-দিন সমান তালের লোডশেডিং পরিবর্তন চায় এলাকাবাসী। দিন রাত ক্রমাগত বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে পরীক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লি ও ব্যবসায়ীদেরকে যথেষ্ট দুর্ভোগ দেখা দেয়। বিশেষ করে গণ মাধ্যমে যারা সংবাদ প্রেরণের কাজ করেন তাদের অবস্থা হয় আরও শোচনীয়। গোবিন্দগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন গোবিন্দগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ঘাপটি মেরে বসে আছেন সরকারবিরোধী কিছুকর্মকর্তা। তারা ইচ্ছামাফিক লোডশেডিং দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা চেষ্টা চালাচ্ছে। যেমন নামাজের সময়, পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া করার সময় এবং সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে যখন মানুষ ঘুমাতে যায় তখন লোডশেডিং দিয়ে থাকে। গোবিন্দগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকৌশলী কামাল আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইদানীং অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ৮মেগাওয়াটের মধ্যে ৪/৩ মতো মেগাওয়াট বিদুৎ মিলছে। চাহিদা থেকে ৪/৫ মেগাওয়াট সংকট থাকে। এক ঘন্টা পর লোডশেডিং দিয়ে থাকেন। স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে জ্বর, ঠান্ডা, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে ডাক্তারা । অটোভ্যানচালক রিপন,সেলিম,নুরউদ্দিন জানান,রোদের যে তাপ মনে হচ্ছে গায়ের চামড়া পুড়ে যাচ্ছে। যদিও ভ্যান পায়ে ঠেলতে হয় না, তবুও রোদের কারণে রাস্তায় থাকাটাই কঠিন। বিশ্বস্ত কিছু সূত্র থেকে জানা যায়, এই ধারা চলতে থাকবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। দীর্ঘদিন এই কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। এদিকে নতুন করে চালু হচ্ছে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং। মাত্রারিক্ত গরম মানুষকে বিপর্যস্ত করে তুলছে সেই সাথে আবার লোডশেডিং। সারাদিন অফিস শেষে বাসায় ফিরে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে চাকরি জীবীদের। লোডশেডিংয়ের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেলে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে জনতা?
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মনিরুল ইসলাম,লোডশেডিংয়ের এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই ধারা চলতে থাকবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাদের কিছু করার নেই।
এএমএল/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪১:২১ ● ৩৪২ বার পঠিত