
বুধবার ● ১৫ এপ্রিল ২০২০
করোনার প্রভাব কুয়াকাটায় পর্যটন খাতে এক মাসে ৫০ কোটি টাকা লোকসান
হোম পেজ » পর্যটন » করোনার প্রভাব কুয়াকাটায় পর্যটন খাতে এক মাসে ৫০ কোটি টাকা লোকসানকুয়াকাটা সাগরকন্যা অফিস॥
করোনায় আঘাত হানার পর গত এক মাসে পর্যটন নগরী সাগর কন্যা কুয়াকাটায় এ ভরা মৌসুমে অর্ধশত কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছে বলে এখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। হতাশ হয়ে পড়ছেন কয়েক শ’ ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ী। এসব খাতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫ হাজার মানুষ। এভাবে চলতে থাকলে তাদের অনেকেই পথে বসার আশঙ্কা করছেন। ইতোমধ্যে তাদের অনেক পরিবারে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যটন খ্যাতে কোন প্রনোদনা প্যাকেজ না থাকায় দুঃখপ্রকাশ করছেন ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
বুধবার সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সারাদেশের ন্যায় কুয়াকাটার ১৩টি ট্যুরিস্ট স্পট এখন খা খা করছে। লকডাউনে পুরোদেশ যখন স্থাবির তখন কুয়াকাটাও তার ব্যতিক্রমন নেই। ১৫টি ফার্মেসী বাদে সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শুরুতেই আবাসিক হোটেল মোটেল এবং ওয়াটার বাসসহ ট্যুরিস্ট বোটগুলো বন্ধ করে দেয় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক। এর পরে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় বার্মিজ মার্কেট, সীবিচের ঝিনুক মার্কেট, রাখাইন মহিলা মার্কেট, শুটকির দোকান, রেস্তোরা, মিউজিয়াম, ইলিশপার্কসহ ছোট বড় মাঝারি সকল ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ট্যুরিজম নেতাদের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে কুয়াকাটায় গত এক মাসে অর্ধশত কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছে। এ ভাবে আরো চলতে থাকলে বেশীরভাগ পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারীরা পথে বসার আশঙ্কা করছেন। এ দিকে সরকারের পক্ষে প্রনোদনার প্যাকেজে পর্যটন খাতে কোন সুখবর না থাকায় হতাশা দেখা দিয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সৈকতে বার্মিজ আচারে দোকান জাকারিয়া জাহিদ বলেন, আমার দোকানে কর্মচারি বেতন দিতে পারি নাই। ভরা মৌসুমে বন্ধ হলো দোকান। কুয়াকাটা সী ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস পরিচালক জনি আলমগীর বলেন, মূল সিজনেই এই বিপদে পড়তে হলো আমাদের। প্রায় এক মাসে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আর কতদিন চলে এভাবে আল্লাহই জানেন। তারপরও সরকারের ঘোষিত প্রনোদনা প্যাকেজে যেন আমরা থাকতে পারি সে জন্য জোর দাবি জানাই। ভাসমান কাঁকড়া ফ্রাইয়ের দোকান, জামাল কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এমনিতেই ৬ মাস ব্যবসা করি সাগরপাড়ে, তাও এখন এই অবস্থা। বন্ধ দোকানপাট কি করবো! লোন নেয়া আছে, খাইব না দেনা দিব। পরি না মানুষের কাছে হাত বাড়াতেও। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এ্যাসোশিয়েশন (কুটুম)‘র সিনিয়র সহ সভাপতি হোসাইন আমির বলেন, বিশ্ব ব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আঘাতে পর্যটন শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কুয়াকাটার মাঝারী ধরণের ব্যবসায়ীদের ক্ষতির আশংকা বেশি মনে করছি। কারণ যত অভাব থাকুক লজ্জার কারণে এরা বাহিরে কারো কাছে হাত বাড়াতেও পারছে না। তাদের পাশে সরকারের বিশেষ নজর দেওয়া উচিৎ। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম মোতালেব শরিফ বলেন, করোনায় সবচেয়ে ক্ষতি হতে যাচ্ছে পর্যটন খাত। ১৭ মার্চ থেকে কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেল মোটেল বন্ধ রয়েছে। ফলে গত এক মাসে এই খাতে কুয়াকাটায় ইতিমধ্যে অন্তত ৫০ কোটি টাকা লোকসানে পড়েছে। পর্যটন শিল্পে এই সিজন পুরোটাই শেষ। সরকার ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীদের দ্রুত ঋণের ব্যবস্থা না করলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
এইচএ/এনবি
বাংলাদেশ সময়: ২২:০০:৩০ ● ৮৩৯ বার পঠিত