পর্যটন স্পট গুলো খুলে দেয়ার দাবি-নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আরেক নাম চরফ্যাশন

প্রথম পাতা » পর্যটন » পর্যটন স্পট গুলো খুলে দেয়ার দাবি-নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আরেক নাম চরফ্যাশন
শনিবার ● ১১ জুলাই ২০২০


নৈসগিস সৌন্দর্যের আরেক নাম চরফ্যাশন

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥


নৈসগিস সৌন্দর্যের আরেক নাম ভোলার চরফ্যাশন। পর্যটক এলাকা হিসাবে খ্যত বন্ধের দিন গুলোতে থাকে ভীড়। করোনার ভাইরাস অক্রমন অবস্থায় বরিশালের কুয়াকাটা খুলে দেয়া চরফ্যাশনে পর্যটক স্পট গুলো খুলে দেয়ার দাবী পর্যটক প্রেমিদের।
কবির ভাষায়, সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই সোনার বাংলাদেশ। এই বাংলা প্রাকৃতিক সৌন্দয্য আমাদের কাম্য। এ স্বাধীন বাংলার একাংশ ঝড়ঝঞ্জা আর বন্যার নিত্য সংগ্রামের বিশাল জনপদের নাম চরফ্যাশন। আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে ভাসমান দ্বীপাঞ্চল চরফ্যাশনের সৃষ্টি। কাব্যজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র বাংলা ও বাংলার মঙ্গলের কবি মরহুম মোজাম্মেল হকের স্মৃতিতে তেতুলিয়া ও মেঘনা মোহনা বিভৌত ভোলা জেলা সদর থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে পল্লী বাংলার ৫৫৫ বর্গমাইল আয়তন, লোকসংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলার মধ্যে চরফ্যাশন অন্যতম। যা একটি জেলা হওয়ার যোগ্য। দেশে এমন কিছু জেলা আছে যা ১৮টি জেলার চেয়ে আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে চরফ্যাশন বৃহত্তর। যার সীমান দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর উত্তরে লালমোহন পশ্চিমে তেতুলিয়া নদী, পূর্বে মেঘনা মোহনা, চরফ্যাশন পাঁচটি অক্ষর নিয়ে গঠিত হলেও এর বিশ্লেষণ ব্যাপক। যাহা কিছু নিয়ে গঠিত তার সামান্যতম বিশ্লেষণ করলেও ইতিহাস বা পুস্তক রচিত হয়ে যাবে। তারপরও উল্লেখযোগ্য কিছু না লিখলেই নয়।
১৮৮৫ সালে ভাসমান চরের কিছু অংশ চাষাবাদের যোগ্য হয়ে উঠে। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে শুরু হয় জনবসতি, গড়ে উঠে জীবন। এরপর তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ‘জি ফ্যাশন’ নামক এ এক ম্যাজিস্ট্রেট এখানে কর্মরত ছিলেন। ফ্যাশন শব্দটির সাথে উপজেলায় রয়েছিল অসংখ্য “চর” ফ্যাশন শব্দটির পূর্বে চর ব্যহার করে চরফ্যাশন উপজেলা নামকরণ করা হয়। ১৯০০ সালে অভয় চন্দ্র সেন নামক এক ডেপুটি কালেক্টর আসেন। তখন মানুষের মধ্যে জোড়পূর্বক জমি বিতরণ করা হতো। যাকে ডেকে নিয়ে জমি দিয়েছেন সে অঢেল সম্পত্তির মালিক হলেন, আর যে কালেক্টরের নিকট যাওয়াকে ভয় পেয়েছেন সে সম্পত্তির মালিক থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ১৯২০ সালে চরফ্যাশন বাজার সৃষ্টি। ১৯৪৮ সালে ভোলা থেকে চরফ্যাশনের সড়ক পথের রাস্তা সম্প্রসারিত হয়। বাজারে সর্বপ্রথম আবদুস সোবহান মুন্সীর হোটেল ছিল। তার পর সেখানে ঢাকা হোটেল নামক একটি হোটেল ছিল। বর্তমানে ওই স্থানে ক্যাফে জুয়েল হোটেল ও কামরুল ডিজিটাল ষ্টুডিও ছিল আজ ওই স্থানে রয়েছে ফলের দোকান। উপজেলায় দু‘টি আলিয়া মাদ্রাসা ও একটি সরকারি কলেজসহ ১০টি কলেজসহ অনেক স্কুল-মাদ্রাসা রয়েছে। তারপরও এই দ্বীপ অঞ্চলে অনেক স্থানেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২৪ শে জানুয়ারি ২০১৮ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টাওয়ার (জ্যাকব টাওয়ার) উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে চরফ্যাশন টি.বি স্কুল মাঠের এক বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বলেন, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় আমি এই প্রথম আসছি। এখানে এসে সাবেক উপ-মন্ত্রী জ্যাকবের উন্নয়ন আমাকে মুগ্ধ করেছে। জ্যাকব যে উন্নয়ন করেছে তা সত্যিই প্রসংশিত। চরফ্যাশন জেলা হওয়ার জন্য আমার সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ বলেছেন, চরফ্যাশন জেলা বাস্তবায়ন গণমানুষের প্রাণের দাবি। পর্যাক্রমে চরফ্যাশন জেলা ঘোষণা করা হবে। চলতি বছর দুলারহাট থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন, চরফ্যাশন হাসপাতালকে ১০০ শর্য্যায় উন্নতি করণ। সর্ব শেষ সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি নতুন চমক দেখিয়ে নতুন ইতিহাসে রচনা করেছেন।
দেশের মধ্যে চরফ্যাশন এই প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালত স্থাপন করা হয়েছে। স্থানাস্তর নয় নতুন করে পদটি সৃজন করে স্থাপিন করেছেন।
এখানে পর্যটকদের জন্যে রয়েছে জ্যাকব টাওয়ার, শেখ রাসেল শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র, বেতুয়া লঞ্চঘাট, খামার বাড়ী, বিছিন্ন দ্বীপ কুকরি মুকরি, ও ঢালচরের তারুয়ার পর্যটক স্পট  কুকরি মুকরি এলাকায় রয়েছে আধুনিক মানের রেষ্টহাউস যেখানে হেলিকপ্টার নামার এক অব্যয় স্থান রয়েছে। করোনা ভাইরাস উপলক্ষ্যে দীর্ঘ ৩মাস এই সকল পর্যটক স্পট গুলো বন্ধ রয়েছে। দেখা যায় বরিশালের কুয়াকাটা খুলে দিলেও চরফ্যাশনে এই সকল পর্যটক স্পট গুলো খুলে দেয়া হয়নি ফলে  বিনোদন প্রেমিরা রয়েছে বিনোদন বঞ্চিত। চরফ্যাশন পৌর সভার মেয়র শ্রী বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, চরফ্যাশনের জ্যাকব টাওয়ার, ফ্যাসন স্কয়ার ও শেখ রাসেল শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রটি পৌর সভার আয়ের একটি উৎস্য এই আয় না থাকায় পৌরসভাটি অর্থনৈতিক মন্দা রয়েছে। চরফ্যাশন বাসী এই পর্যটক এলাকার স্পট গুলো খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। বিছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম হাওলাদার বলেন, উপজেলার মধ্যে পর্যটকদের জন্যে ঢালচরের “তারুয়া” দর্শণীয় স্থান। পর্যটক এলাকায় হিসাবে কুয়াকাটা খুলতে চরফ্যাশনের স্পটগুলো খুলে দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীণ বলেন, কুয়াকাটা খুলছে তা ঠিক আছে আমরাও উর্ধ্বোতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে খুলে দেয়ার চেষ্টা করবো।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৪২:৪৬ ● ১৩৮৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ