দুমকিতে দু‘নম্বর ইটে চলছে টেকসই রাস্তা নির্মাণ!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » দুমকিতে দু‘নম্বর ইটে চলছে টেকসই রাস্তা নির্মাণ!
শনিবার ● ২৪ মে ২০২৫


দুমকিতে দু‘নম্বর ইটে চলছে টেকসই রাস্তা নির্মাণ!

দুমকি (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর দুমকিতে এডিবির অর্থায়নে উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ বিভাগের গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা টেকসই করণ প্রকল্পের অধীনে ৮৪ লাখ ২২হাজার ২৩৪.৯০টাকার উন্নয়ন কাজে দুই নম্বর ইট ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের তারাগাজীর বাড়ী থেকে খানবাড়ি মসজিদ হয়ে বাদুয়া পাকা সড়ক ৫শ‘ মিটার ও এনায়েত খানের মসজিদ থেকে দক্ষিনে গোলাম মোস্তফা খানের বাড়ি হয়ে কচ্ছপিয়া খাল পর্যন্ত ৫শ‘ মিটার একত্রে ১কি. মিটার সড়ক উন্নয়ন কাজে দুই নম্বর ইট ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবে পিআইও অফিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঠিকাদার দুই নম্বর ইট ব্যবহারে রাস্তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
পিআইও অফিস সূত্রে জানা যায়, এডিবির অর্থায়নে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এইচবিবি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তারাগাজীর বাড়ী থেকে খানবাড়ি মসজিদ হয়ে বাদুয়া পাকা সড়ক ৫শ‘ মিটার এনায়েত খানের মসজিদ থেকে দক্ষিনে গোলাম মোস্তফা খানের বাড়ি হয়ে কচ্ছপিয়া খাল পর্যন্ত ৫শ‘ মিটার দুটি প্যাকেজে ১কি. মিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে পটুয়াখালীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স গাজী এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: নুরুজ্জামানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। গাজী এন্টারপ্রাইজের পক্ষে যুবদল সমর্থক আমির ও জুয়েল নামের দুই যুবক সাব-ঠিকাদারী নিয়ে কাজটি শুরু করেন। শুরুতেই ভেকু মেশিন দিয়ে রাস্তা কেটে পরিমানে কম বালুর মাদায় ২নম্বর ইট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবে ঠিকাদার ও প্রশাসনের যোগসাজশ থাকায় কাজের মান নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করছেন না।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা খানবাড়ি সংলগ্ন সড়কের দুইপাশে এডিবির অর্থায়নে উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ শ্রমিকরা। মো: রুবেল মিয়া নামের এক যুবকের তত্ত্বাবধানে কয়েকজন মিস্ত্রি নিম্নমানের ইট দিয়ে গাঁথুনির কাজ করছেন। জানতে চাইলে রুবেল মিয়া দুই নম্বর ইটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ঠিকাদার যা পাঠান তা দিয়েই কাজ করতে হয়। দুই ট্রাক দুই নম্বর ইট পাঠিয়েছেন ঠিকাদার।’
এ সময় স্থানীয়রা জানান, খবর পেয়ে ইউএনও পরিদর্শণে এসে ২নম্বর ইট দেখে কাজ বন্ধ করে দেন এবং দুই নম্বর ইট সাইট থেকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। একই সাথে ১নম্বর ইট এনে কাজ না করলে বিল না দেয়ার সাফ জানিয়ে দেন। কিন্ত একদিন কাজ বন্ধ থাকলেও তার পরের দিন থেকে ঠিক একই ইটে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন দিলে পিআইও মোহাম্মদ আলী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এরপরও ২নম্বর ইটে ফের কাজ শুরু করার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ওরাতো ইউএনও স্যারের নির্দেশনাও মানছে না। স্যারের সাথে কথা বলে কি করা যায় দেখছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গাজী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. নুরুজ্জামান বলেন, আমি নিজে কাজটি করছি না। আমার লাইসেন্সে সাব ঠিকাদার জুয়েল ও আমির যৌথভাবে করছে। কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়ে থাকলে অফিস আছে তারা দেখবে। অনিয়ম করে থাকলে তার প্লান্টিরও ব্যবস্থা আছে। মনে হয়না তারা কাজ খারাপ করবে। সাব ঠিকাদার জুয়েল মোবাইল ফোনে বলেন, ইউএনও‘র নির্দেশনা মতেই কাজ করা হবে। ২নম্বর ইট ব্যবহারের বিষয়ে বলেন, ভুলে ২ট্রাক ২নম্বর এসেছে। ওগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। ২নম্বর ইট ব্যবহারের অভিযোগ ঠিক নহে।
দুমকি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আবুজর মো: ইজাজুল হক বলেন, একটি ইটও যদি নিম্নমানের ব্যবহার হয়ে থাকে সেটা অপসারণ করা হবে। এছাড়া কাজে ত্রুটি থাকলে এর বিল আটকে দেওয়া হবে।

এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:২১:২১ ● ৩৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ