আমতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা!
বুধবার ● ৪ জুন ২০২৫


আমতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাড.এইচএম মনিরুল ইসলাম মনিকে পরিষদের ৯ সদস্য অনাস্থা দিয়েছেন। গত পাঁচটি মাসিক সভায় অনুপস্থিত, ব্যাংক থেকে জাল স্বাক্ষর দিয়ে পরিষদের টাকা তুলে আত্মসাৎ, কার্যক্রম পরিচালনায় না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে ৯ইউপি সদস্য অনাস্থা দিয়েছেন।
বুধবার তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁনের কাছে আবেদন করেছেন। সংরক্ষিত নারী সদস্য সানজিদা আক্তার তামান্না ও সদস্য ফারুক আকন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবী করছেন।
জানাগেছে, গত বছর ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার পতনের পর আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি কারনে অকারনে পরিষদে অনুপুস্থিত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে উপজেলা বিএনপি অফিস ভাংচুরসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এ সকল কারনে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। এ বছর পয়েলা জানুয়ারী থেকে ৪ জুন পর্যন্ত তিনি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন এমন অভিযোগ ৯ ইউপি সদস্যের। গত পাঁচ মাসে তিনি মাসিক সভায় অংশ নেয়নি। এতে পরিষদের কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এছাড়াও তিনি অনুপস্থিত থেকে গত ২৭ জানুয়ারী সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য খাদিজা বেগমের স্বাক্ষর জাল করে সোনালী ব্যাংক আমতলী শাখার ( ৪৩০১৮০২০০১০৪৯) হিসাব থেকে ৭ লাখ ১৭ হাজার চার’শ ১৫ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার চেয়ারম্যান মনির বিরুদ্ধে এ সকল  অভিযোগ এনে অনাস্থা দিয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁনের কাছে আবেদন করেছেন। অপর দিকে সংরক্ষিত নারী সদস্য সানজিদা আক্তার তামান্না ও সদস্য ফারুক আকন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবী করছেন।
ইউপি সদস্য মোঃ ফারুক আকন নিজেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবী করে বলেন, চেয়ারম্যান মনির বিরুদ্ধে পাঁচটি মাসিক সভায় অনুপস্থিত, আওয়ামীলীগ কার্যক্রম পরিচালনা করা, স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে পরিষদের টাকা আত্মসাৎসহ একাধিক অভিযোগ এনে পরিষদের ৯ ইউপি সদস্য অনাস্থা দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছি। তবে তামান্না ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান হিসেবে কিভাবে দায়িত্ব পালন করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্যানেল চেয়ারম্যান এক। তাহলে কিভাবে তামান্না ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পায়?
স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে নারী ইউপি সদস্য খাদিজা বেগম বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে ঢাকায় ছিলাম। ওই সময় চেয়ারম্যান ও সচিব আমাকে ফোন দিয়ে টাকা তুলতে সোনালী ব্যাংকের চেকে স্বাক্ষর দেয়ার কথা জানান। পরে এসে জানতে পারি চেয়ারম্যান আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নিয়েছেন।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন দিয়েই ছুটিতে আছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। নারী ইউপি সদস্য খাজিদা আক্তারের স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কারো স্বাক্ষর জাল করিনি। খাদিজা নিজেই স্বাক্ষর দিয়েছে। এখন আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্রমুলক এ অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমি ছুটিতে আসার আগে নারী ইউপি সদস্য সানজিদা আক্তার তামান্নাকে পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে এসেছি।
সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য সানজিদা আক্তার তামান্না বলেন, এ বছর জানুয়ারী মাস থেকে চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম আমাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমিই এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু তিনি (চেয়ারম্যান) ছুটিতে আছেন কিনা তা আমি জানিনা। গত পাঁচ মাস ধরেই তিনি অনুপস্থিত আছেন। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ফারুক আকনের দাবীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার দাবী অযৌক্তিক। চেয়ারম্যান আমাকে লিখিত দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার তা অনুমোদন দিয়েছেন। ওই হিসেবেই আমি পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী কার্যক্রম করা হবে। তবে চেয়ারম্যান আপনার দপ্তরে ছটির আবেদন করেছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন হলো এসেছি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। জেনে বলতে পারবো।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৮:১৯ ● ৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ