তালতলীতে উচ্ছেদকৃত জমিতে ফের ঘর উত্তোলন!

প্রথম পাতা » বরগুনা » তালতলীতে উচ্ছেদকৃত জমিতে ফের ঘর উত্তোলন!
মঙ্গলবার ● ১৫ মার্চ ২০২২


তালতলীতে উচ্ছেদকৃত জমিতে ফের ঘর উত্তোলন!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ঘর উচ্ছেদের ছয় মাস পরে আবারো তালতলীর কচুপাত্রা বাজারে সরকারী খাস জমিতে প্রভাবশালীরা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় শহীদুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ ও আশ্রাব আলী এমন অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেনেকে ঘর নির্মাণের বিষয়টি জানালেও তিনি অজ্ঞাত কারনে ওই ঘর নির্মাণ বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত ওই ঘর উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানাগেছে, গত পাঁচ বছর পুর্বে তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা বাজারের সংযোগ সড়কের পাশের সরকারি খাল ও খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে প্রভাবশালীরা। ওই জমিতে তারা দোকানঘর ও ইমারত নির্মাণ করে। দোকানঘর ও ইমারত নির্মাণ করায় সংকুচিত হয়ে নাব্যতা কমে ভরাট হয়ে যায় খালটি। নাব্যতা কমে যাওয়ায় খালে নৌকা চলাচল ব্যহত হয়। খালের নব্যতা দুর করতে বরগুনা জেলা প্রশাসন খাল ও খাস জমি অবৈধভাবে দখল মুক্ত করতে গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ওই খাল ও খাস জমিতে গড়ে ওঠা পাকা-আধাপাকা ১২৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তানভীর আহম্মদ ঘর উচ্ছেদ করে খাল ও খাস জমি দখল মুক্ত করেন। এতে কিছুটা স্বাভাবিক গতি ফিরে পায় খালটি। ঘর উচ্ছেদের ছয় মাস পরে গত ৮ মার্চ থেকে  আবারোও ওই খাস জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। গত সাত দিন ধরে চলছে ঘর নির্মাণ কাজ। ইতিমধ্যে জাহিদ মিয়া, হাসান খাঁন, কামাল ফকির, হানিফ মাষ্টার, সেরাজ মাষ্টার ও লিটন প্যাদা ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। আবারো কেউ কেউ ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
খোজ নিয়ে জানাগেছে ওই ঘরগুলো অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ঘর নির্মাণে সরকারী কোন নির্দেশনা নেই। অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের বিষয়টি তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেনকে জানালোও তিনি অজ্ঞাত কারনে ঘর নির্মাণ বন্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি এমন অভিযেগ স্থানীয়দের।
শহীদুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ ও আশ্রাব আলী বলেন, ছয় মাস আগে জেলা প্রশাসন খাল দখল করে গড়ে উঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করে দেয়। বর্তমানে সেই জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু হয়েছে প্রভাবশালীরা। ঘর নিার্মণের বিষয়টি তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেনকে অবহিত করেছি। কিন্তু তিনি অজ্ঞাত কারনে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা আরো বলেন, ঘর নির্মাণ করা হলে কচুপাত্রা খাল আবারো দখল দুষনে পরিনত হবে। দ্রুত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবী জানিয়েছেন তারা।
অবৈধ দখলকারী মোঃ জাহিদ মিয়া বলেন, ঘর নির্মাণের কাজ শেষ করেছি কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের কেউ তো কিছুই বললো না।
হাসান খান বলেন, প্রশাসন আমার ঘরের একটি বেড়া খুলেছিল। ওই বেড়াটা নির্মাণ করেছি।
কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, গত দুই দিন আগে খবর পেয়ে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন যারা আবারো ঘর নির্মাণ করছেন তাদের ঘরও নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।  ওই উচ্ছেদ স্থানে কেউ ঘর নির্মাণ করে থাকে তাহলে আবারো ঘর উচ্ছেদ করা হবে।  তিনি আরো বলেন, সরকারী খাস জমিতে কাউকে ঘর নির্মাণের অনুমতি দেয়া হয়নি।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:০১:৪৩ ● ১৫৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ