জনতার ধাওয়ার মুখে-দুমকিতে অপহৃতাকে ফেলে পালালো অপহরণকারীচক্র!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » জনতার ধাওয়ার মুখে-দুমকিতে অপহৃতাকে ফেলে পালালো অপহরণকারীচক্র!
শনিবার ● ১২ মার্চ ২০২২


জনতার ধাওয়ার মুখে-দুমকিতে অপহৃতাকে ফেলে পালালো অপহরণকারীচক্র!

দুমকি (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

 

 

পটুয়াখালীর দুমকিতে ফিল্মিস্ট্যাইলে কলেজ শিক্ষিকা অপহরণের ৩০মিনিটের মধ্যেই স্থানীয় জনতা অপহরণকারীদের ধাওয়া করে অপহৃতাকে উদ্ধার করেছে। শনিবার (১২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের কলেজ গেটের অদূরে প্রকাশ্যে এ অপহরণ চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে। এব্যাপারে ভিকটিম দুমকির এল. এ. এম ইউনাইটেড মহিলা কলেজের পদার্থ বিদ্যা বিষয়ের প্রদর্শক মোসা: তাহেরা আলী বাদি হয়ে তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিক ও তার ভাই আরিফসহ ৭/৮জন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে দুমকি থানায় একটি অপহরণ চেষ্টা মামলার এজাহার দায়ের করেছে।
মামলার এজাহারে কলেজ শিক্ষিকা তাহেরা আলী রূমা অভিযোগ করেন, কলেজের রুটিন ক্লাশ শেষ করে বেলা সোয়া ১২টায় বাসার উদ্দেশ্যে কলেজ গেটে যাওয়ার পথে পূর্বথেকে ওঁথপেতে থাকা তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিক ও তার সহদর আরিফের নেতৃত্বে ৭/৮জনের একটি অপহরণকারিচক্র আকস্মিক তাকে টেনে হিচড়ে মাহেন্দ্রায় তুলে লেবুখালীর দিকে যাচ্ছিল। এসময় তার ডাকচিৎকার শুনে উপজেলার থানা ব্রিজ এলাকার লোকজন ধাওয়া করে প্রায় ৩কি.মিটার দুরত্বের লালখা ব্রিজ এলাকায় অপহরণকারীদের মাহেন্দ্রা আটকে দিলে ধরা খাওয়ার আশঙ্কায় তাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চক্রটি পালিয়ে যায়। স্থানীয় শ্রীরামপুর ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন অটো-মোটরসাইকেল চালক অপহরণকারীদের ধাওয়া দিলে তাকে (ভিকটিম) রাস্তায় ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আল-ইমরানের কাছে অভিযোগটি অবহিত করত: দুমকি থানায় অপহরণ চেষ্টার মামলার এজাহার দাখিল করেন।
ভিকটিম তাহেরা আলী রুমা জানায়, লেবুখালী ইউনিয়নের আঠারগাছিয়া গ্রামের মৃত শাহজাহান বিডিআরের ছেলে যৌতুক লোভী সাইফুল্লাহ জাহান মানিকসহ তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠসহ দাম্পত্য কলহের জেরে তিনবছর পূর্বে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের সংসারে একছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তিনি দুমকিস্থ ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত কলেজে চাকুরি করছেন। ডির্ভোসের পর থেকেই তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ মানিক নানা ভাবে তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে দুমকি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা আছে। থানায় অভিযোগ করার পর থেকেই চক্রটি তাকে জীবনের তরে শেষ করে ফেলার অপচেষ্টা করে আসছে। বর্তমানে তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন।
শ্রীরামপুর ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন কবির মৃধা বলেন, থানাব্রিজ অতিক্রমকালে দ্রুতবেগের মাহেন্দ্রা থেকে কলেজ শিক্ষিকার আর্তচিৎকার শুনে মোটরসাইকেল নিয়ে ওই মাহেন্দ্রার পিছু নেই এবং এক পর্যায়ে সামনে গিয়ে রাস্তা আটকে গতিরোধ করলে অপহরণকারী সাইফুল্লাহ মানিক ও তার ভাই আরিফ তর্কে জড়ায়। ইত্যাবসরে মাহেন্দ্রা থেকে ভিকটিম কলেজ শিক্ষিকা আহতাবস্থায় কৌশলে ছুটে গিয়ে অপর একটি অটোবাইকে উঠে নিকট দুরত্বে উপজেলা কমপ্লেক্স চত্ত্বরের ইউএনও’র বাসায় ঢুকে নিজেকে রক্ষা করেন। অপর দিকে পথচারী লোকজন জড়ো হলে ধরাপড়ার ভয়ে অপহরণকারী চক্র দ্রুত মাহেন্দ্রায় উঠে পালিয়ে যায়। পরে ইউএন মো. আল-ইমরান পুলিশ ডেকে তাকে (কলেজ শিক্ষিকা) থানায় পাঠায়।
প্রকাশ্য দিবালোকে এমন অপহরণ চেষ্টার ঘটনায় হতবাক এল.এ.এম কলেজের অধ্যক্ষসহ সহকর্মী সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা তাৎক্ষণিক থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। অভিযুক্ত সাইফুল্লাহ জাহান মানিকের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে বার বার কল করলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৪:৩০ ● ১৬৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ