বাউফলে চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে প্রেমিককে বিয়ে করলো সেই কিশোরী

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » বাউফলে চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে প্রেমিককে বিয়ে করলো সেই কিশোরী
রবিবার ● ২৭ জুন ২০২১


বাউফলে চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে প্রেমিককে বিয়ে করলো সেই কিশোরী

পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বিয়ের একদিন পরই চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে প্রেমিক রমজানকে বিয়ে করেছে পটুয়াখালীর বাউফলের অষ্টম শ্রেণীর সেই আলোচিত কিশোরী নাজনিন আক্তার (১৪)। রবিবার (২৭ জুন) সকালে প্রেমিক রমজানের মামা বাড়িতে বসে বিয়ের এ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। এরআগে শনিবার সন্ধ্যায় কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে (৬০) তালাক দেয় নাজনিন। বর্তমানে সে কুম্ভখালী গ্রামের মামা শশুর পলাশ হাওলাদারের বাড়িতে আছে। এদিকে চেয়ারম্যানকে তালাক দেয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের মে মাসে কনকদিয়া ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার নজরুল ইসলাম হাওলাদারের মেয়ে নাজনিনের সাথে নাজিরপুর ইউনিয়নের তাঁতেরকাঠি গ্রামের গার্মেন্টকর্মী সোহেলের বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে সম্মতি ছিল না নাজনিনের। তাছাড়া নাজনিনের সঙ্গে তার গৃহশিক্ষক রমজানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।  বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন সোহেল, নাজনিন ও রমাজানের পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। শুক্রবার কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে মীমাংসার জন্য যান উভয় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে সোহেল ও নাজনিনের বিয়ে বিচ্ছেদ করেন চেয়ারম্যান। শালিস বৈঠকে নাজনিন রমজানের সাথে সংসার করতে চায়।
এ সময় নাজনিনকে দেখে পছন্দ করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। তিনি নাজনিনের বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। নাজনিনের সম্মতি নিয়ে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর কাজী ডেকে চেয়ারম্যান বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।
চেয়ারম্যানের একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, চেয়ারম্যানের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে বিয়ে করেছেন। চেয়ারম্যানের অসম বিয়ে নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয় তোলপাড়। সামাজিক ও পারিবারিকসহ নানা চাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন চেয়ারম্যান।  তারপরই তিনি বিয়ে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে একদিন পরেই শনিবার সন্ধ্যায় কাজী ডেকে নাজনিনের কাছ থেকে তালাকনামা রাখেন তিনি।
চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, নাজনিন তার প্রেমিকের কাছে ফিরে যেতে চায়। সে সুখে থাকতে চায়। আমি জোড় করে কারও সঙ্গে সংসার করতে চাই না। বিয়ের পর আমার ঘরেই ছিল নাজনিন। তাকে একবারের জন্যও স্পর্শ করিনি।
রবিবার ভোরে প্রেমিক রমজানের সাথে বিয়ে হয়েছে। এখন তিনি শৃংখল মুক্ত, উল্লেখ করে নাজনিন বলেন, নিজের সিদ্ধান্তেই চেয়ারম্যানকে বিয়ে করেছি। আমিই তাকে তালাক দিয়েছি। রমজান আমার জন্য আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। তাকেই আমি বিয়ে করেছি। এখন তাকে নিয়েই সংসার করতে চাই।
কিশোরীকে বিয়ে করার অপরাধে চেয়ারম্যানের কোন শাস্তি হবে কি না। এমন প্রশ্নে বাউফলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে, যদি বাল্য বিয়ের ঘটনা হয় তাহলে চেয়ারম্যানকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

জেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:১১:০৬ ● ৫৫৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ