পটুয়াখালীতে অবরোধ শেষে ইলিশ শিকারে জেলেদের যাত্রা

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » পটুয়াখালীতে অবরোধ শেষে ইলিশ শিকারে জেলেদের যাত্রা
বৃহস্পতিবার ● ২৩ জুলাই ২০২০


পটুয়াখালীতে অবরোধ শেষে ইলিশ শিকারে জেলেদের যাত্রা

পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

মৌসুমের শুরুতেই ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে গভীর সমুদ্রে যাত্রা করেছে পটুয়াখালী উপকূলীয় এলাকার কয়েক হাজার জেলে। এনিয়ে জেলেপাড়া গুলোয় বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। জালে মিলবে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ, আড়ৎ গুলোয় ফিরে আসবে বাণিজ্যিক প্রাণচাঞ্চল্য এমন প্রত্যাশা জেলেসহ ব্যবসায়ীদের। তবে মৌসুমের শুরুতে ৬৫ দিনের অবরোধ নিয়ে জেলে-ব্যবসায়ীদের মাঝে রয়েছে তীব্র ক্ষোভ। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে অবরোকালীন সময়সীমা নির্ধারণের দাবী তাদের।
পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে গভীর সাগরে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে পটুয়াখালীর উপক’লীয় উপজেলার কলাপাড়ার কুয়াকাটা, লতাচপালী, মহিপুর, ধুলাসর, লালুয়া, ধানখালী, চম্পাপুর এবং রাঙ্গাবালী বড়বাইশদিয়া, মৌডুবী, রাংগাবালী, চালিতাবুনিয়া, চর মোন্তাজ এলাকার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে। ৬৫ দিনের মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে প্রায় সহ¯্রাধিক মাছ ধরা ট্রলার নিয়ে তারা দলে দলে যাত্রা শুরু করেছেন। অবরোধকালীন সময়ে দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে জেলেদের সমুদ্রে যাত্রার ফলে দক্ষিণের বৃহৎ মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর এবং রাঙ্গাবালীর আড়ৎসহ বরফকল এবং সংশ্লিস্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ফিরতে শুরু করেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
আলীপুর-কুয়াকাটা ফিশিং ট্রলার মাঝি সমিতির সাবেক সভাপতি নুরু মাঝি বলেন, মাছ ধরা ছাড়া জেলেরা অন্য কোন কাজ জানেনা। ফলে অবরোধকালীন সময়ে বেকার হয়ে পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাতে হয়। অবরোধ শেষে যখন মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে যাত্রা করি, পরিবারের সদস্যদের মাঝে বিরাজ করে এক ধরণের আনন্দ উচ্ছাস।
এফবি ফয়সাল-৩ ফিশিং ট্রলারের সিদ্দিক মাঝি বলেন, পরিজন নিয়ে কস্ট করলেও ৬৫ দিনের অবরোধ আমারা মেনে চলছি। কিন্তু এসময়ে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশীর সমুদ্র সীমানায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে অবরোধের যে সুফল সরকার আশা করছে তা কোন কাজেই আসবেনা। এসময়ে প্রদেয় প্রণোদনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এফবি মা-বাবা ট্রলারেরতাসির মাঝি বলেন, আমরা সাহায্য চাইনা কর্ম করে পরিজন নিয়ে খেতে চাই।
মহিপুর মৎস্য বন্দর ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি ফজলু গাজী বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ মুলত ট্রলিং বোটের জন্য। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে এটি ইলিশ শিকারী জেলেদের উপড় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এরফলে বেকার থাকায় পেশা বদলে অন্য পেশায় ঝুকে পড়েছে অনেক জেলে। ফলে কয়েক’শ কোটি টাকা সমুহ ক্ষতির শংকায় ব্যবসায়ীরা। এনিয়ে মৎস্য মন্ত্রনালয়ে দৌড়ঝাপ করে কোন সুফল না পেয়ে রিট করতে বাধ্য হয়েছি।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, বাঁধাহীন প্রজননের জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সকল প্রকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা অরোপ করেছে মৎস্য বিভাগ। বঙ্গোপসাগরের ৪৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। মূলত এ সময়টি এসব মাছের অধিকাংশের প্রজনন সময়। তবে জেলে ও ব্যবসায়ীদের দাবীর বিষয়টি উর্ধ্বতনদের জাননো হয়েছে। যেহেতু এটি গবেষনার বিষয়। আশা করি একটা সমাধান হবে।

জেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১২:৫১:১৫ ● ৩৪১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ