বৃহস্পতিবার ● ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
মহিপুরে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
হোম পেজ » কুয়াকাটা » মহিপুরে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, মহিপুর (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর মহিপুর থানা এলাকায় মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে মহিপুর থানা এলাকার খাপড়াভাঙ্গায় আয়োজিত মানববন্ধনে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে। অবিলম্বে এ হয়রানি বন্ধ করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
কর্মসূচি থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- নিরপরাধ রহিম খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা প্রত্যাহার ও তাকে অব্যাহতি প্রদান, অর্থের বিনিময়ে একতরফা ও পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মামলাটির পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানা এলাকার জেএল নং- ৩৩ হরেন্দ্রপুর মৌজা ও কিসমতে এসএ ১০৬ ও ৬২ নম্বর খতিয়ানে রহিম খান গং এবং মোছা. মনিরা বেগম গংদের জমি রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কাগজপত্র অনুযায়ী মনিরা বেগম গংদের যে পরিমাণ জমি পাওয়ার কথা, বিএস জরিপে তার চেয়ে অতিরিক্ত জমি তাদের নামে রেকর্ড হয়েছে।
এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বসে সমাধানের প্রস্তাব দেওয়া হলেও মনিরা বেগম গং বারবার সময়ক্ষেপণ করেন বলে অভিযোগ করেন রহিম খান গং। পরে কাগজপত্র অনুযায়ী নিজেদের জমি ভোগদখলের উদ্যোগ নিলে রহিম খানদের ফাঁসাতে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআর মামলা নং ৮৫৮/২৫ হিসেবে দায়ের করা হয়।
রহিম খান বলেন, তারা এসএ ১০৬ ও ৬২ নম্বর খতিয়ানে মোট ৩৬ দশমিক ২৯ একর সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক। অথচ মামলার নথি অনুযায়ী মনিরা বেগমদের স্বামী ওই দুই খতিয়ানে মাত্র ৬ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করেছেন। বিএস জরিপে অতিরিক্ত জমি রেকর্ড হওয়াকে কেন্দ্র করেই বিরোধের সূত্রপাত।
তিনি আরও বলেন, আদালত মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা শাখাকে দায়িত্ব দিলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে তাদের বক্তব্য না শুনে একতরফাভাবে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, নিরপেক্ষ পুনঃতদন্ত ছাড়া প্রকৃত সত্য উদঘাটন সম্ভব নয়। তারা অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অন্যদিকে অভিযোগের বিষয়ে মনিরা বেগম বলেন, তাদের রেকর্ডীয় প্রায় ১ দশমিক ২০ একর জমিতে একটি মাছের ঘের রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই ঘেরটি মঞ্জু নামের এক ব্যক্তির কাছে লিজ দেওয়া ছিল এবং প্রায় ৯ বছর তিনি সেখানে মাছ চাষ করেছেন। গত বছর মঞ্জুকে লিজ না দিয়ে নুরছায়েদ নামের আরেকজনকে লিজ দিলে মঞ্জু ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপর রহিম খানের পরামর্শে ঘের দখলের ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা তার মেয়ে ও তাকে মারধর করে। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা শাখার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে উপস্থিতিতেই সরেজমিন তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন।
এমই/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৪:২৬:৩০ ● ৪৭ বার পঠিত
