বৃহস্পতিবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

বরগুনায় জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় কমিউনিটি সংলাপ

হোম পেজ » বরগুনা » বরগুনায় জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় কমিউনিটি সংলাপ
বৃহস্পতিবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০২৫


 

বরগুনায় জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় কমিউনিটি সংলাপ

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, বরগুনা

বরগুনায় জলবায়ু ঝুঁকি, সুশাসনের দুর্বলতা ও নাগরিক সেবায় বৈষম্য নিয়ে এক কমিউনিটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে ‘এসসিজিজিপি’ প্রকল্পের উদ্যোগে এ আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত বিন সাদিক।

সংলাপে উপস্থাপিত গবেষণা ও জরিপে জানানো হয়, উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ুর প্রভাব দ্রুত বাড়ছে। এর কারণে মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। বরগুনার উপকূল অঞ্চলের ৮৭.৪ শতাংশ মানুষ সরাসরি জলবায়ু ক্ষতির মুখোমুখি। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যাকে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি মনে করেন ৪২.৮ শতাংশ মানুষ। জলবায়ূজনিত উদ্বেগে ভুগছেন ৬৭.৩ শতাংশ এবং ৬.৯ শতাংশ পরিবার ইতোমধ্যে স্থানচ্যুত হয়েছেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্মকর্তা আফজাল হোসেন লাভলু। তিনি জানান, বরগুনার মানুষের আয়ে সংকট দিন দিন বাড়ছে। ৮২.১ শতাংশ পরিবারের মাসিক আয় ১০ হাজার টাকার নিচে। কৃষক, জেলে, দিনমজুর ও নারী নির্ভর পরিবার সবচেয়ে ঝুঁকিতে। সেবা প্রাপ্তিতেও বৈষম্য রয়েছে। ২৩.৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন রাজনৈতিক অনুকূলতা ছাড়া সেবা পাওয়া কঠিন। ৪৮.৮ শতাংশ আত্মীয়তাবাদ ও ২৪.৪ শতাংশ রাজনৈতিক প্রভাবকে সেবা প্রদানের প্রধান বাধা হিসেবে দেখেছেন। অভিযোগ ব্যবস্থাও দুর্বল-মাত্র ৩.৬ শতাংশ মানুষ অভিযোগ জানাতে পেরেছেন। সংলাপের অংশগ্রহণকারীদের ৭৫ শতাংশ মনে করেন ইউনিয়ন পরিষদ সেবা প্রদানে নিরপেক্ষ নয়।

সংলাপের প্রধান অতিথি বরগুনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত বিন সাদিক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বৈশ্বিক সংকট হলেও উপকূলবাসী এর সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয় ছাড়া বৈষম্যমুক্ত সেবা নিশ্চিত সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সিভিক ফোরামের সভাপতি মোশারফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান। উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিক ফোরামের সভাপতি জাকির হোসেন, বরগুনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সালেহ, রেডিও লোকবেতারের পরিচালক মনির হোসেন কামালসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি। জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা সেবা প্রাপ্তির অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সরকারি কর্মকর্তা তাঁদের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনার কথা জানান। আলোচনা পরিচালনা করেন তারেক বিন আনসারি।

সভা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৮টি ইউনিয়নের জন্য দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় উপকরণ হস্তান্তর করেন। উপকরণগুলোর মধ্যে ছিল সেফটি গ্লাভস, সেফটি ভেস্ট, লাইফ জ্যাকেট, কুঠার, টর্চলাইট, ফার্স্ট এইড বক্স, গামবুট, হ্যান্ড মাইকসহ মোট ১৯ ধরনের সরঞ্জাম। এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ ও ওয়েব ফাউন্ডেশনের মধ্যে উপকরণ ব্যবস্থাপনা-সংরক্ষণ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

নলটোনা, বরগুনা সদর, আয়লা পাতাকাটা, বুড়িরচর, এম বালিয়াতলী, কেওড়াবুনিয়া, আইলা পাতাকাটা ও ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিবরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে এসব উপকরণ গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৪২:১৭ ● ৭০ বার পঠিত