সাগরকন্যা প্রতিবেদক, ভোলা

ভোলার সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইস্পিতার মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজের তিন দিন পর তার মরদেহ উদ্ধার হয় লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী থেকে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় নৌ পুলিশ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

শুক্রবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বুড়িরঘাট এলাকায় নদীতে মরদেহ ভেসে উঠলে নৌ পুলিশ তা উদ্ধার করে। কালো দাগ ও আঘাতের চিহ্ন দেখে লক্ষ্মীপুর থানায় এসআই আজিজুল ইসলাম অজ্ঞাত পরিচয়ে হত্যা মামলা করেন। রোববার বিকেলে মরদেহ দাফনের পর সোমবার নিহতের বাবা মাসুদ রানা (একজন ইজিবাইক চালক) থানায় গিয়ে মেয়ের কাপড় দেখে শনাক্ত করেন।

নিখোঁজের বিষয়ে ১৭ জুন ভোলা থানায় জিডি করেছিলেন মাসুদ রানা। তিনি জানান, সেদিন সকালে প্রাইভেট পড়তে বের হয়ে আর ফেরেনি ইস্পিতা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সে সকাল ১০টায় ইলিশাঘাট থেকে ঢাকাগামী এমভি কর্ণফুলী-৪ লঞ্চে উঠেছিল।

লঞ্চের ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন জানান, কেবিন না পেয়ে ডেকে ছিলেন ইস্পিতা। মোবাইলে কারো সঙ্গে বারবার কথা বলছিলেন তিনি। চরের কাছে পৌঁছালে হঠাৎ নদীতে ঝাঁপ দেন। যাত্রীরা জানালে লঞ্চ ঘুরিয়ে উদ্ধার চেষ্টা হয়, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে আবার ঢাকার দিকে রওনা দেয় লঞ্চটি।

মরদেহ উদ্ধারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ ঘুরতে থাকলে জেলা প্রশাসন লঞ্চ স্টাফ ও কয়েকজন যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, লঞ্চে কোনো নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। তারা জানায়, লাফ দেওয়ার পর ইস্পিতার মোবাইল ফোন ও ব্যাগ এক যুবক তুলে নেয়, যাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এদিকে গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিবি পুলিশ জানায়, ঘটনার পেছনে অন্য কিছু রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুকর্ণার আগে দেওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কিছু পোস্টও নজরে এসেছে, যেখানে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত ছিল।

পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানায় পুলিশ। নিহতের সহপাঠীরা এ ঘটনায় ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।