
মঙ্গলবার ● ২৬ নভেম্বর ২০১৯
মহিপুরে দুবৃত্তের আগুনে বসত: ঘর ভষ্মীভূত
হোম পেজ » কুয়াকাটা » মহিপুরে দুবৃত্তের আগুনে বসত: ঘর ভষ্মীভূতকাজী সাঈদ, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার আছালতপাড়া গ্রামে গভীর রাতে পরিত্যাক্ত বসত ঘরে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। এতে ঘরটির অধিকাংশ পুড়ে গেছে। সোমবার দিবাগত রাত দুই টার দিকে প্রতিবেশীরা আগুন দেখতে পেয়ে এক ঘন্টা চেষ্টা করে নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুনের বিষয়ে স্বামী-স্ত্রী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে একে অপরকে দায়ী করেছেন। মঙ্গলবার সকালে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বসত ঘরের মালিক মো. নুরুল হক হাওলাদার অভিযোগ করেন তার স্ত্রী মোসা. সাজেদা বেগম, শ্যালক মো. বাসেত শিকদার ও মো. আব্দুর রশিদ শিকদার, বায়রা মো. আবুল কালাম, বায়রার ছেলে মো.সিরাজুল ইসলাম পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আগুন দিয়েছে।
এদিকে স্ত্রী মোসা. সাজেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত মাসখানেক পূর্বে আমার স্বামী নুরুল হক হাওলাদার পারিবারিক কলোহ থেকে আমাকে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। সেই থেকে আমি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমি তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছি, সেও আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। ঘরের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে আগুন দিয়ে আমি ও আমার ভাইয়ের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামের আঃ রাজ্জাক শিকদারের মেয়ে সাজেদা বেগমকে দীর্ঘ ৩৫ বছর পূর্বে ধুলাসার ইউনিয়নের ধুলাসার গ্রামের আব্দুল হক হাওলাদারের ছেলে মো. নুরুল হক হাওলাদার বিবাহ করেন। বর্তমানে তাদের তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। দুই মেয়ে ও ছেলের বিবাহ হয়েছে। সবার ছোট আড়াই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ঝাটি লেগেই থাকত। একপর্যায়ে নুরুল হক হাওলাদার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুড় বাড়ির পাশে আছালতপাড়া গ্রামে জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। তাতেও ঝামেলা কমছে না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলোহ সৃষ্টি হলে শ্যালকরা এসে মারধর করেন এমনটাই অভিযোগ করেছেন নুরুল হক হাওলাদার।
সম্প্রতি পারিবারিক কলোহের জের ধরে নুরুল হক স্ত্রী সাজেদা বেগমকে মারধর করার একপর্যায়ে মাথা ফেটে আহত হয়। এসময় শ্যালক আ. রশিদ শিকদার ও বাসেত শিকদার এসে বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে নুরুল হককে মারধর করেন। পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উভয় পক্ষের আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে নুরুল হক বাদী হয়ে স্ত্রীসহ ৭জনের বিরুদ্ধে মারধর ও বসত ঘর লুটপাটের অভিযোগ এনে মামলা করেন এবং স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী-স্ত্রী নিজ নিজ বাবার বাড়ি বসবাস করছেন। বসত ঘরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো। উভয় পক্ষের মামলা দুইটি মহিপুর থানার এসআই মো. কামাল হোসেন তদন্ত করেছেন।
এদিকে লুটপাটের মামলা করে গত ১৫দিন পূর্বে নুরুল হক বসত ঘরের সমস্ত মালামাল দিনের বেলা প্রকাশ্যে তার বাবার বাড়ি ধুলাসারে নিয়ে যায়। সোমবার সকালের পাকের ঘরটি ভেঙ্গে নিয়ে যায়। ওই রাতে খালি পরিত্যক্ত ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। নুরুল হকের দাবী তার স্ত্রী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন ঘরে আগুন দিয়েছে। স্ত্রী সাজেদা বেগমের দাবী তাকেসহ তার ভাইদের ফাঁসাতে নুরুল হক নিজেই আগুন দিয়েছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সোহেল আহম্মাদ জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত রহস্য বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেএস/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ০:০৪:০৭ ● ৪৭০ বার পঠিত