পিরোজপুরে চাকরি হারাচ্ছেন জাল সনদের ১৪শিক্ষক

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » পিরোজপুরে চাকরি হারাচ্ছেন জাল সনদের ১৪শিক্ষক
সোমবার ● ২৯ মে ২০২৩


পিরোজপুরে চাকরি হারাচ্ছেন জাল সনদের ১৪শিক্ষক

পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পিরোজপুরের জাল সনদধারী ১৪ জন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে জেলার ১৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছেন।এই জাল সনদধারী ১৪ শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশনা দিয়েছে  শিক্ষা মন্ত্রনালয়। আর তাদের ফেরত দিতে হবে বেতন বাবদ নেয়া টাকা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখা) মো. সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি জানা গেছে। ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর যাচাইবাছাই করে সারাদেশে ৬৭৮ জন শিক্ষক কর্মচারীর জাল সনদ শনাক্ত করা হয়েছে।ওই জাল সনদধারী শিক্ষক কর্মচারীর তালিকার মধ্যে পিরোজপুরের ১৪ জন শিক্ষকের নামও উল্লেখ রয়েছে।
পিরোজপুরে যে ১৪ জন জাল সনদধারী শিক্ষক সনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১ জন বাদে সকলেই এমপিওভুক্ত।তারা নিয়মিত সরকারি বেতন তুলছেন।জাল সনদে এমপিওভুক্ত ১৩ শিক্ষক বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে মোট ৯৭লাখ ৩৮ হাজার ১৫৩ টাকা আত্মসাত করেছেন। এদের মধ্যে ,পিরোজপুর সদর উপজেলার হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
সহকারী শিক্ষক(কম্পিউটার)মিসেস নাসিমা আক্তারকে ৭ লাখ ৩৭ হাজার ৪১০ টাকা, রাজারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক( শরীর চর্চা) মোঃ মাসউদ আহসানকে ৫ লাখ ২০ হাজার ৩৫ টাকা, শতদশকাঠি সতীলক্ষ্মী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক( কম্পিউটার) লিটন রায়কে ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৫ টাকা, বাবলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার)বিপুল কুমার রায়কে ৩ লাখ ৯৩ হাজার১৫৫ টাকা, সিকদার মল্লিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) শিউলি রানী হালদারকে ৯ লাখ ৬৩ হাজার ১২৭ টাকা, মঠবাড়িয়া উপজেলার ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজি কলেজের প্রভাষক( কম্পিউটার)মোসাম্মদ মাসুমা পারভীনকে১৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৬ টাকা, ভগীরথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক(কম্পিউটার) সাজেদা পারভীন তুলিকে ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ টাকা, তুষখালী ইউনিয়ন তোফেল আকন মেমঃ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক(কম্পিউটার) মোঃ মাসুদ রানাকে ৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৯০ টাকা,ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া রাজপাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক( হিন্দু ধর্ম)  সীমা রানীকে  ৬ লাখ ৫২ হাজার ৭০৫ টাকা, নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংগল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) সুচিত্র কুমার হালদারকে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৫ টাকা, পশ্চিম সোহাগদল শহীদ স্মৃতি বি এম কলেজের প্রভাষক( ইতিহাস) শরিফা ইয়াসমিন ( এমপিওভুক্ত  হননি), নাজিরপুর উপজেলার চাঁদকাঠি আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী( সমাজ বিজ্ঞান)  প্রিয়াংকা হালদারকে ১১ লাখ ৪ হাজার ২১৫ টাকা, বৈঠাকাটা কলেজের প্রভাষক( বাংলা)  মোছাঃ কহেতুবকে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ টাকা,নাওটানা বি এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক( কৃষি) মনি মন্ডলকে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৭৫০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব জাল সনদধারী শিক্ষক বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তাদের এমপিও বন্ধ করা এবং অবৈধভাবে এমপিও বাবদ ভোগ করা লাখ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে।এছাড়াও যারা অবসরে গেছেন তাদের অবসরের সুবিধা প্রাপ্তি বাতিল করা ও যারা স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন তাদের আপত্তির টাকা অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করবেন  প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।জাল সনদধারী শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরকে বলেছে মন্ত্রণালয়।

মঠবাড়িয়া উপজেলার ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজি কলেজের জাল সনদধারী প্রভাষক মোসাম্মদ মাসুমা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম আল মারুফ জানান,আমাদের কলেজের প্রভাষক মোসাম্মদ মাসুমা পারভীনের জাল সনদের বিষয়টি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেয়া হবে।

পিরোজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইদ্রিস আলী আযিযী জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই।জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কাগজপত্র পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্হা নেয়া হবে।


আরএইচএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:১১:২৪ ● ১০৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ