দুমকিতে হাত-পা বেধেঁ গৃহবধুকে নির্যাতন, স্বামী-সতীন আটক!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » দুমকিতে হাত-পা বেধেঁ গৃহবধুকে নির্যাতন, স্বামী-সতীন আটক!
সোমবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২২


দুমকিতে হাত-পা বেধেঁ গৃহবধুকে নির্যাতন, স্বামী-সতীন আটক!

দুমকি(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

 

 

 সতিনের প্ররোচনায় সংসার থেকে বিতারিত করতে প্রথম স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে মুগুর দিয়ে পিটিয়ে সারা শরীর থেতলে দিয়েছে পাষান্ড স্বামী। খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধুকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। অভিযুক্ত স্বামী-সতীনকে গ্রেফতার করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গতশনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়. শ্রীরামপুর গ্রামের শাহজাহান খার বিয়ে পাগল বখাটে ছেলে জামাল খা (৪০) বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে পৃথক ভিটিতে ঘর সংসার ও রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। নরসিংদির বেলাবে এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে প্রথম স্ত্রী হালিমা বেগম (৩৫)কে বিয়ে করে। এ সংসারে হালিমার এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান আছে। হালিমার সংসার জীবনের ৬বছরের মাথায় ঢাকায় শ্রমজীবির কাজ করার সময় নিলুফা নামের সম্পর্কে মামাতো বোনকে বিয়ে করে পাষান্ড স্বামী জামাল খা। দু’তিন মাসের বেশী এ বিয়ে টেকেনি। পরবর্তিতে পাশের বাড়ির মেয়ে (তৃতীয় স্ত্রী) সোনিয়া (৩০)কে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে ঢাকায় প্রায় একবছর অবস্থানের পরে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর শাশুরী রাহিমা বেগম বলেন, গ্রামের বাড়ি থেকে প্রথম স্ত্রী হালিমাকে বিতারিত করতে তৃতীয় স্ত্রী সোনিয়া শুরু থেকেই নির্বোধ স্বামী জামালকে দিয়ে নানা ছলাকলায় অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল। এক পর্যায়ে অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে ছেলে-মেয়েকে নরসিংদিতে নানা-নানির কাছে রেখে গৃহকর্মীর ভিসায় সৌদি আরবে চলে যায়। ৪বছর পরে দেশে ফেরার পর টাকার লোভে পাষান্ড স্বামী জামাল নানা ভাবে ফুসলিয়ে হালিমাকে ফিরিয়ে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। হালিমার কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টায় প্রায়শই অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে হালিমাকে।

আহতগৃহবধুর জা (দেবরের স্ত্রী) রূপা বেগম জানায়, শনিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে তৃতীয় স্ত্রী সোনিয়ার ইন্দনে তার স্বামী জামাল খা তার প্রথম স্ত্রী হালিমাকে বসত:ঘরের পেছনের ডোবায় ফেলে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ফুলা জখম করে। এক পর্যায়ে টেনে-হিচড়ে ঘরে ঢুকিয়ে হাত-পা বেঁধে নানা কৌশলে শারিরিক ও পাশবিক নির্যাতন চালায়। এ নির্যাতনের চিত্র স্বচক্ষে দেখে একজন ভিক্ষুক চিৎকার চেচামেচি করে প্রতিবেশীদের জড়ো করে। খবর পেয়ে দুমকি থানার ওসি আবদুস সালামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছে গুরুতর আহত গৃহবধু হালিমাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।

উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. শায়লা পারভীন বলেন, গৃহবধু হালিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম, হাত ভাঙ্গা ও কামড়ের দাগ রয়েছে।

এব্যাপারে ভিকটিম হালিমা বেগম বাদি হয়ে যৌতুক নিরোধ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুমকি থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত পাষান্ড স্বামী জামাল খা ও সতীন সোনিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে রবিবার কোর্টে সোপর্দ্দ করলে আদালত আসামীদ্বয়কে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

দুমকি থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) আবদুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, আসামীদ্বয়কে রবিবার সকালে কোর্টে সোপর্দ্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত আসামীদ্বয়কে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

 

 

 

এমআর

 

বাংলাদেশ সময়: ২২:০৯:৪০ ● ৪৬৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ