কলাপাড়ায় ক্ষতিপূরণ দাবিতে মানববন্ধন

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় ক্ষতিপূরণ দাবিতে মানববন্ধন
শুক্রবার ● ১২ মার্চ ২০২১


কলাপাড়ায় ক্ষতিপূরণ দাবিতে মানববন্ধন

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥


কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা ও ফুলতলী গ্রামে আরপিসিএলের ১৩২০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ ২০ পরিবারের সদস্যরা তাদের বসত ঘর, গাছপালা ও পুকুরসহ ভূমির জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনার দেড়গুণ মূল্য পরিশোধসহ মিথ্যা ও হয়রাণীমূলক মামলা তুলে নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
শুক্রবার (১২ মার্চ) বেলা ১২ টায় পূর্ব লোন্দা গ্রামের ইয়াসিন খাঁ’র বাড়ির সামনে ও ফুলতলী গালর্স স্কুলের সামনে পৃথক পৃথক দুটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকার বঞ্চিত পরিবারগুলো এবিষয়ে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা ও ফুলতলী গ্রামে নির্মানাধীন ১৩২০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহনকৃত জমির ক্ষতিগ্রস্থ্য ২০ টি পরিবারের জমির প্রাপ্য তিনগুন টাকার দেড়গুন মূল্য পেলেও বাকী দেড়গুন টাকাসহ বসত ঘর, গাছ ও পুকুরের মূল্য নির্ধারণ করেনি আরপিসিএল কর্তৃপক্ষ। অধিকন্তু, মিথ্যা ও হয়রানী মূলক মামলা দিয়ে ঘড়-বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করছেন তারা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রবাসী শহিদুল ইসলামের স্ত্রী জুলেখা বেগম দুধের ছোট্ট শিশুকে কোলে নিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছে। আমি দুটো শিশু সন্তান নিয়ে আমার বাড়িতে বসবাস করছিলাম। আরপিসিএল কর্তৃপক্ষ আমার বসতি জমি, ঘড়-বাড়ি, পাছপালা ও পুকুরের কোন টাকা পরিশোধ না করেই জায়গা দখল নিতে আসে। এতে বাধা দিলে আরপিসিএল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় কতিপয় দালালচক্র আমাদের নামে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক একাধিক মামলা দিয়ে গ্রাম ছাড়া করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ্য স্থানীয় বাসিন্দা মো. মঈন উদ্দিন খাঁন, আব্দুর রহমান খাঁন, মো. মোকলেছ গাজী, মোসা. নুরনাহার বেগম, ছালমা বেগম, বকুল নেছা ও শিপন খাঁনসহ একাধিক ভূক্তোভোগী পরিবার একই অভিযোগ করেন। ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের দাবি, তারা জমি দিয়েছেন প্রয়োজনে সম্পদও দিবেন। কিন্তু সম্পদের মূল্য না দিয়ে তাদের জোড়পূর্বক উচ্ছেদ করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। রাতের আঁধারে বালু ফেলে বসত ঘর তলিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারা সকল ধরনের হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি ও সম্পদের ন্যায্য মুল্য পাওয়ার দাবিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়টি তারা পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করেন বলে জানা যায়। জেলা প্রশাসকের দরবার থেকে একটি তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু তদন্ত টিমের রিপোর্ট না দেয়ার আগেই আরপিসিএল কর্তৃপক্ষ জোড়পূর্বক তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করে। বালু কেটে সব কিছু ভরাট করা শুরু করেন।

এ ব্যাপারে আরপিসিএলের নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল করিম জানান, পটুয়াখালী ডিসি অফিস হতে আরোও দেড় বছর আগে ঐ জমি আমাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা মানবতার বিবেচনায় তাদের থাকতে দিয়েছি। আইন অনুযায়ী তারা এখন ওখানে অবৈধভাবে রয়েছে। বর্তমানে আমরা আমাদের অধিগ্রহনকৃত জায়গা ভরাট করছি। তিনি আরোও বলেন, ক্ষতিগ্রহস্থ্য পরিবারের সদস্যরা পটুয়াখালী ডিসি অফিসে একটি তদন্ত আবেদন করেছিল। সে পেক্ষিতে তদন্ত টিম এসে তদন্ত করে গেছে কিন্তু প্রতিবেদন এখনও দেয়নি। তারা কবে প্রতিবেদন দিবে এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও জানান। তবে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, কাউকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে না। বরং তারা আমাদের হুমকী দিয়েছে তাই আমরা মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।

এমবি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩২:৩৫ ● ৪৫৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ