স্ত্রীর মামলায় স্বামী কারাগারে-আমতলীতে মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগ

প্রথম পাতা » বরগুনা » স্ত্রীর মামলায় স্বামী কারাগারে-আমতলীতে মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগ
শনিবার ● ৩১ অক্টোবর ২০২০


স্ত্রীর মামলায় স্বামী কারাগারে

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

শিক্ষক স্বামী মোঃ ফয়জুল হকের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করে বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী লাকি বেগম। স্বামীর স্বজনরা মামলা তুলে নিতে এবং মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। এমন অভিযোগ এনে শনিবার (৩১ অক্টোবর) আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নে জামাতা ফয়জুল ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শ^শুর নজরুল ইসলাম হাওলাদার ও শ^াশুড়ী লিলি বেগম।
লিখিত বক্তব্যে লাকীর বাবা নজরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ২০১৭ সালে তালতলী উপজেলার বড়পাড়া গ্রামের আলী আহম্মদ সিকদারের ছেলে তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ ফয়জুল হবে সাথে আমার মেয়ে লাকীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাতাকে মোটর সাইকেল ও পাঁচ ভরি স্বর্ণাংলকারসহ অন্তত ছয় লক্ষ টাকার আসবাবপত্র দেই। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আমার জামাতা পরকিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এতে আমার মেয়ে বাঁধসাধে। এরপরই নেমে আসে আমার মেয়ের উপর অমানষিক নির্যাতন। পরকিয়ার বাঁধা দিলেই আমার মেয়েকে মারধর ও নির্যাতন করে। এ নিয়ে কয়েক দফায় স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক হয়েছে কিন্তু কোন সুরহা হয়নি। আমার জামাতার নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা বিদ্যালয় এলাকা প্রবাহমান আছে। বিদ্যালয় ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়ে এলাকায় মিছিল হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে সে রক্ষা পায়। বিগত এক মাস পূর্বে পুনরায় তিনি পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। আমার মেয়ে এর প্রতিবাদ করলেই আমার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরে জমি রাখার জন্য ছয় লক্ষ টাকা  যৌতুক দাবী করে। এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় বেধরক মারধর করে। এ ঘটনায় লাকি বাদী হয়ে শিক্ষক যৌতুক লোভী স্বামী ফয়জুলের বিরুদ্ধে গেল রবিবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী থানার ওসিকে আসামী ফয়জুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার রাতে তালতলী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান মামলার প্রধান আসামী ফয়জুলকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে ফয়জুল বরগুনা জেল হাজতে রয়েছে। এদিকে ফয়জুল জেল হাজতে যাওয়ার পরে বেপরোয়া হয়ে পড়ের তার বড় ভাই আল-আমিন সিকদার। তিনি শুক্রবার দুপুরে তার ১৫-১৬ জন সহযোগী নিয়ে ফয়জুলের তালতলী বাসার মালামাল নিয়ে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ কিছু মালামাল আটকে দেয়। মালামাল নিয়ে আসার পর তার ভাই আল-আমিন মামলার বাদী লাকি বেগমকে মামলা তুলে নিতে  হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে ঘর লুট মামলা দিয়ে হয়রানী করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নে এমন অভিযোগ এনে জামাতা ফয়জুলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শ^শুর নজরুল ইসলাম হাওলাদার। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন শ^াশুড়ী লিলি বেগম।
এ বিষয়ে ফয়জুলের বড় ভাই আল-আমিন সিকদারের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে তালতলী তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  আবু তাহের বলেন, আমি শুনেছি স্ত্রীর মামলা শিক্ষক ফয়জুল জেল হাজতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তালতলী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:২৭:১০ ● ৩৫২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ