আর্থিক সঙ্কটে সরকারি চিনিকলগুলোতে ক্রমাগত বাড়ছে আখচাষিদের পাওনা

প্রথম পাতা » জাতীয় » আর্থিক সঙ্কটে সরকারি চিনিকলগুলোতে ক্রমাগত বাড়ছে আখচাষিদের পাওনা
রবিবার ● ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


আর্থিক সঙ্কটে সরকারি চিনিকলগুলোতে ক্রমাগত বাড়ছে আখচাষিদের পাওনা

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে চলছে সরকারি চিনিকলগুলো। অথচ চিনি শিল্পই হচ্ছে দেশের কৃষিভিত্তিক সর্ববৃহৎ শিল্প। প্রতি বছরই সরকারি চিনিকলগুলোর লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। বিগত অর্থবছরে (২০১৭-২০১৮) সরকারি চিনিকলগুলোতে লোকসান হয় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা। তাতে পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে টাকার অভাবে চাষিদের কাছ থেকে কেনা আখের মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না সরকারি ১৫টি চিনিকল। চিনিকলগুলোর কাছে আখ চাষিদের আখের মূল্য বাবদ চাষিদের পাওনার পরিমাণ ২২৫ কোটি টাকা। আর প্রতিদিনই চাষিদের পাওনার পরিমাণ বাড়ছে। আখ বিক্রির টাকা না পাওয়ায় মিলে মিলে চাষিরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। তারা আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। এবারও আখের অভাবে চলতি মাড়াই মৌসুমে (২০১৮-২০১৯) চিনির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। পাশাপাশি উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় মিলগুলো আরো বিপাকে পড়েছে। চিনি শিল্প করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি মাড়াই মৌসুমে মিলগুলোতে ১৬ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে এক লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর চিনি রিকভারি হার নির্ধারণ করা হয় ৭ দশমিক ৪৩ ভাগ। ডিসেম্বর থেকেই মিলগুলো পর্যায়ক্রমে উত্পাদনে যায়। সরকারি চিনিকলগুলো হচ্ছে- পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, সেতাবগঞ্জ, শ্যামপুর, রংপুর, জয়পুরহাট, নর্থবেঙ্গল, নাটোর, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, দর্শনার কেরু এন্ড কোম্পানি, মোবারকগঞ্জ, ফরিদপুর ও জিলবাংলা চিনিকল। চিনি শিল্প করপোরেশন প্রতিমণ আখের মূল্য এবার ধার্য করেছে ১৪০ টাকা। জানুয়ারি মাসের পর প্রতি ১৫ দিন অন্তর মণ প্রতি ৫০ পয়সা করে বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু আখের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় চাষি এখন অন্য ফসল চাষে ঝুঁকে পড়ছে। ফলে চিনিকলগুলোর সঙ্কট বাড়ছে।
সূত্র জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মিলগুলোতে চিনি উৎপাদন হয়েছে ৫২ হাজার ৩৫ মেট্রিক টন। চিনি রিকভারির হার শতকরা ৬ দশমিক ১৭ ভাগ। আর ওই সময়ে করপোরেশনের হাতে মজুত চিনির পরিমাণ ছিল এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৪০ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। মিলগুলোর চিনির দাম প্রতি মেট্রিক টন ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি ৫০ টাকা। অন্যদিকে র সুগার আমদানি করে বেসরকারি মিলগুলোতে উৎপাদিত চিনির দাম কম। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। ফলে করপোরেশনের মিলগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এমনকি ডিলাররাও মিল থেকে চিনি তুলছে না।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:২০:২৫ ● ৩৬৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ