
আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া ব্রীজ ভেঙ্গে ইট বোঝাই ট্রলি নদীতে পড়ে গেছে। এতে ওই ট্রলির চালক রাসেল ও হেল্পার ইয়াসিন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে।
জানাগেছে, ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ আমড়াগাছিয়া নদীতে আমড়াগাছিয়া বাজারের সংলগ্ন স্থানে আয়রন ব্রীজ নির্মাণ করে। নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করায় ব্রীজটি নড়বড়ে ছিল। নির্মাণের ১০ বছরের মাঝায় ২০১৬ সালে ব্রীজটির মাঝখানের অংশ ভেঙ্গে পড়ে। ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ায় কুকুয়া এবং গুলিশাখালী ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে যায়। তাৎক্ষনিক ওই ব্রীজের ভাঙ্গা অংশ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ মেরামত করে। মেরামত করার পরে ওই ব্রীজ দিয়ে বড় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। কিন্তু প্রকৌশল বিভাগের নিষেধ উপক্ষো করে ট্রাক ও ট্রলির মালিকরা ওই ব্রীজ দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে থাকে। এতে দিন দিন ব্রীজ নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বুধবার সকালে ইট বোঝাই ট্রলি আমড়াগাছিয়া থেকে গুলিশাখালী গুচ্ছগ্রামে যাচ্ছিল। আমড়াগাছিয়া ব্রীজটি পাড় হওয়ার সময় ব্রীজটি মাঝের অংশ ভেঙ্গে ট্রলিটি নদীতে পড়ে যায়। এতে ওই ট্রলিতে থাকা চালক রাসেল ও হেল্পার ইয়াসিন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। কিন্তু ট্রলিটি নদীতে তলিয়ে গেছে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ট্রলিটি উদ্ধার করতে পারেনি। ট্রলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মেরামতের চার বছরের মাথায় ব্রীজটি পুনরায় ভেঙ্গে পড়েছে। এতে দুইটি ইউনিয়নের অন্তত ত্রিশ হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত ওইস্থানে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন ধারন ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল করায় এ ব্রীজ ভেঙ্গে পরেছে।
বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, ব্রীজের মধ্যের অংশ ভেঙ্গে নড়ীতে পড়ে আছে। ট্রলিটি নদীতে তলিয়ে গেছে। উৎসুক জনতা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে।
ট্রলি মালিক সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক সরদার বলেন, ইট বোঝাই ট্রলি ব্রীজ পাড় হওয়ার সময় ব্রীজ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে গেছে। ট্রলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আমড়াগাছিয়া বাজারের ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম বলেন, আমড়াগাছিয়া নদীর এ ব্রীজ দিয়ে কয়েক হাজার মানুষের যাতাযাত করতো। ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ায় দুই ইউনিয়নের প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত ওইখানে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানাই।
বাদল সরদার বলেন, গত চার বছর আগে এই ব্রীজটি ভেঙ্গে পরেছিল। ওই একই স্থান দিয়ে আবার ভেঙ্গে পরেছে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আল মামুন বলেন, ধারন ক্ষতার চেয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় ব্রীজ ভেঙ্গে পড়েছে। ট্রলির মালিককে ব্রীজ মেরামত করে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ওইখানে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় পাঠানো আছে। অনুমোদন হলে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, ভাঙ্গা ব্রীজ এলাকা পরিদর্শন করে মানুষের যাকে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর