সোমবার ● ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ভাতিজার অভিযোগ কলাপাড়ায় চাচার পালক পুত্রকে ওয়ারিশ দেখানোর চেষ্টা

হোম পেজ » পটুয়াখালী » ভাতিজার অভিযোগ কলাপাড়ায় চাচার পালক পুত্রকে ওয়ারিশ দেখানোর চেষ্টা
সোমবার ● ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫


 

ভাতিজার অভিযোগ: কলাপাড়ায় চাচার পালক পুত্রকে ওয়ারিশ দেখানোর চেষ্টা

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আইনগত ও শরিয়তসম্মত ওয়ারিশদের বাদ দিয়ে মৃত ব্যক্তির স্ত্রীর পালক পুত্রকে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ওয়ারিশ হিসেবে উপস্থাপন করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম নামের এক যুবক।

সোমবার দুপুরে কলাপাড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরামের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাহিদুল ইসলামের ফুফু নুরুন্নাহার ও চাচাতো দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাম মাস্টার উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি চম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বড় চাচা মরহুম মাহাবুব আলম চলতি বছরের ২৩ মে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে প্রায় ১০৫ শতাংশ জমি রেখে যান। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী আমেনা খাতুন (চমন) আইনগত ও শরিয়তসম্মত প্রকৃত ওয়ারিশদের বাদ দিয়ে পালিত পুত্র আবু সাঈদকে ওয়ারিশ হিসেবে দেখিয়ে জমি ও সম্পত্তি দখল এবং হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, মাহাবুব আলমের মৃত্যুর পর তার চার বোনই প্রকৃত ওয়ারিশ হন। কিন্তু ইসলামী শরিয়ত ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী পালিত সন্তান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়ারিশ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও চলতি বছরের ৯ জুলাই পালিত পুত্র আবু সাঈদের নামে নামজারির আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট কানুনগো নামজারি অনুমোদন দেন।

পরবর্তীতে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক বিষয়টি আমলে নিয়ে মিস কেস করার পরামর্শ দেন। এরপর চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর একটি মিস কেস রুজু করা হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

জাহিদুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, তদন্ত চলমান থাকা সত্ত্বেও গত ১৭ ডিসেম্বর পালিত পুত্রের নামে ৪০ শতাংশ জমি হেবা ঘোষণার দলিল সম্পাদন করা হয়, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এর প্রতিবাদে ১৮ ডিসেম্বর হেবা ঘোষণার দলিল (নং- ৫৪৪৯/২৫) বাতিলের জন্য উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চাচার জীবদ্দশায় ফুফুদের কাছে ১০২ শতাংশ জমি আড়াই লাখ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে অসুস্থতার কারণে তিনি দলিল সম্পাদন করতে পারেননি। মৃত্যুর পর চাচি আমেনা খাতুন জমি দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে চাচি, পালিত পুত্র ও তার শ্বশুর কলাপাড়া মহিলা কলেজের এক কর্মচারী বাহাদুর মিলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ করেন জাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, অন্যান্য ওয়ারিশরা শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মত সমাধান চান। ন্যায্য অধিকার আদায়ে প্রশাসন, ভূমি অফিস ও আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৃত মাহাবুব আলমের স্ত্রী আমেনা খাতুন চমন বলেন, আবু সাঈদ আমার গর্ভধারিত সন্তান। সে আমার পালিত পুত্র নয়। সন্তান হিসেবে সে তার বাবার সম্পত্তির ওয়ারিশ। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৮:১৭ ● ৩৪ বার পঠিত