বৃহস্পতিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
ফলোআপ রিপোর্ট ভুয়া সনদ কাণ্ডে বরখাস্ত দক্ষিণ আইচা কলেজের সভাপতি সবুজ খাঁন
হোম পেজ » লিড নিউজ » ফলোআপ রিপোর্ট ভুয়া সনদ কাণ্ডে বরখাস্ত দক্ষিণ আইচা কলেজের সভাপতি সবুজ খাঁন

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, চরফ্যাশন (ভোলা)
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁনের মাস্টার্স ডিগ্রির সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার সভাপতির পদ বাতিল করে নতুন সভাপতি মনোনয়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
মো. সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁন দক্ষিণ আইচা থানাধীন চরমানিকা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং মো. আলী মিয়ার ছেলে।
দক্ষিণ আইচা থানা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সবুজ খাঁন নিজেকে থানা বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও দলের কোনো কার্যকরী সাংগঠনিক পদে তার সম্পৃক্ততা নেই।
স্থানীয় সূত্র জানায়, থানা বিএনপির নেতা পরিচয়ে সবুজ খাঁন ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত মাস্টার্স ডিগ্রির সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে দক্ষিণ আইচা কলেজের এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে গত ১ নভেম্বর ২০২৫ জনৈক ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সনদ যাচাই কার্যক্রম শুরু করে।
যাচাই শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. একেএম শামসুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দাখিলকৃত সনদে কোনো ক্রমিক নম্বর নেই, কোর্স কোডে অসংগতি রয়েছে এবং স্বাক্ষর ও তারিখেও গরমিল পাওয়া গেছে। এসব কারণে সনদ জাল হিসেবে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরে আসে। গত ২৪ ডিসেম্বর বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে কলেজ পরিদর্শক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার স্বাক্ষরিত এক লিখিত নির্দেশনায় দক্ষিণ আইচা কলেজের অধ্যক্ষকে জানানো হয়- মো. সিরাজুল ইসলামের মাস্টার্স সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় তার সভাপতির দায়িত্ব আর বৈধ নয়।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, শূন্য ঘোষিত ওই পদে অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রিধারী যোগ্য তিনজন প্রার্থীর নাম শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রস্তাব আকারে পাঠাতে হবে।
এ আদেশ প্রকাশের পর কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে নানা আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, ভুয়া সনদের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করা পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক ও লজ্জাজনক।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে কলেজের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে যোগ্য প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:১৭:২১ ● ২১ বার পঠিত
