বুধবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২৫

নৌকাই যেন দোকান নাজিরপুরে ভাসমান হাটে বিক্রি হয় কোটি টাকার শ্যাওলা ও কচুরিপানা

হোম পেজ » ফিচার » নৌকাই যেন দোকান নাজিরপুরে ভাসমান হাটে বিক্রি হয় কোটি টাকার শ্যাওলা ও কচুরিপানা
বুধবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২৫


 

নাজিরপুরে ভাসমান হাটে নৌকা যেন দোকান, বিক্রি হয় কোটি টাকার শ্যাওলা ও কচুরিপানা

আল-আমিন হোসাইন, নাজিরপুর সাগরকন্যা প্রতিবেদক (পিরোজপুর)

নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বেলুয়া নদীর মোহনায় প্রায় দুই শত বছরের পুরোনো দেশের অন্যতম বৃহত্তম ভাসমান হাটে প্রতি সপ্তাহে শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পানা ও দুলালী লতা বিক্রি করে কোটি টাকার বাণিজ্য করেন স্থানীয়রা। এ বাজারের প্রতিটি নৌকাই যেন হয়ে ওঠে একটি স্বতন্ত্র দোকান।

সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার ভোরে নদীর বুক জুড়ে ভাসমান হাট বসে। সরেজমিন দেখা যায়, নাজিরপুরের আশপাশের প্লাবিত অঞ্চল থেকে এসব শ্যাওলা ও বিভিন্ন লতা সংগ্রহ করে নৌকাভর্তি করে আনা হয় এই ঐতিহ্যবাহী হাটে। আশ্চর্যের বিষয়, এসব শ্যাওলা ও কচুরিপানা মূলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং বিক্রিও হয় বেশ ভালো দামে।

স্থানীয়রা সাগরকন্যাকে জানান, নাজিরপুরের একটি বড় এলাকা সারা বছর পানির নিচে থাকায় প্রচলিত কৃষিকাজ সম্ভব নয়। তাই কৃষকেরা ভাসমান কৃষি পদ্ধতিতে শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পানা ও দুলালী লতা ব্যবহার করে বেড তৈরি করেন। ওই বেডে সবজি চারা ও বীজ রোপণ করা হয়। চারা তৈরির জন্য এসব উপাদান অপরিহার্য হওয়ায় এ অঞ্চলে এগুলোর কদর যেন সোনার সমান।

ট্যাপ পানা বিক্রি করতে আসা বিশারকান্দি এলাকার জুলফিকার সাগরকন্যাকে জানান, শুক্রবার নৌকায় যুগিয়া এলাকা থেকে মাল বোঝাই করেন। রাতে রওনা দিয়ে ভোরে হাটে পৌঁছে ২ হাজার ৫০০ টাকার পণ্য ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। তিনি সারাবছর এই ব্যবসা করেন এবং সংসারের পেছনে খরচ করে বছর শেষে কিছু টাকা সঞ্চয়ও করতে পারেন। এই ব্যবসায় কোনো চালান বা অনুমতি লাগে না।

নৌকা থেকে শ্যাওলা কিনতে আসা সোনাপুর গ্রামের কবির শেখ জানান, তিনি ২০০ টাকার একটি আটি কিনেছেন। এগুলো গ্রামে গ্রামে বিক্রি করলে ভালো লাভ হবে। স্থানীয় কৃষকরাও জানান, এসব উপাদান ছাড়া চারা উৎপাদন সম্ভব নয়। অনেকেই বছরে লক্ষাধিক টাকা আয় করেন এগুলো বিক্রি করে।

নাজিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান মিল্টন সাগরকন্যাকে বলেন, শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পানা ও দুলালী লতা দিয়ে বছরে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করা হচ্ছে। এগুলো জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং চারা উৎপাদনের মান ভালো হওয়ায় সারা দেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৪:৫৩ ● ৩০ বার পঠিত