সোমবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

গলাচিপায় গৃহবধুকে মারধরসহ নির্যাতনের অভিযোগ!

হোম পেজ » পটুয়াখালী » গলাচিপায় গৃহবধুকে মারধরসহ নির্যাতনের অভিযোগ!
সোমবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪


গলাচিপায় গৃহবধুকে মারধরসহ নির্যাতনের অভিযোগ!

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ১ সন্তানের জননীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। হাসপাতালে ভর্তিঅবস্থায় কাতরাচ্ছে ওই গৃহবধূ ও তার সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গলাচিপা সদর ইউনিয়নের পক্ষিয়া লঞ্চঘাট ৬ নম্বর ওয়ার্ড মোসলেম গাজীর মেয়ে ফাতেমা বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূকে মারধর করে তার স্বামী মো. হোচেন হাওলাদার। মারধরকারী স্বামী মো. হোচেন হাওলাদার হচ্ছেন গোলখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুহরী গ্রামের রফিক হাওলাদারের ছেলে।
আহত ফাতেমা বেগম জানান, যৌতুকের জন্য প্রায়ই আমার স্বামী আমাকে মারধর করত। গতকাল রবিবার রাতে যৌতুকের জন্য পুনরায় আমাকে আমার বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে বললে আমি রাজী না হওয়ায় আমার স্বামী আমাকে সারা শরীরেপিটিয়ে রক্তাক্ত করে। আমার বাবা গরিব মানুষ। রিক্সা চালিয়ে কোনরকম দিন আনে দিন খায়। আমার বাবা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। তারপর আবার বাবার কাছে কীভাবে টাকা চাইব। আমার স্বামীকে এ কথা বুঝিয়ে বললেও তিনি কোন কথা না শুনে আমাকে মারতে থাকেন। আমি এর বিচার চাই। যাতে আর কোন স্বামী স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবী না করে। আমার স্বামীর ঔরষে ২ বছরের একটি পুত্র সন্তান আছে। ছেলের নাম আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করে।হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মেজবাহউদ্দিন বলেন, ফাতেমা বেগম আমার চিকিৎসাধীনে ৩য় তলায় ১১ নং বেডে ভর্তি আছে।তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলাজখম ও কালো কালো দাগ আছে ও মাথায় চোট লেগেছে। এ বিষয়ে ফাতেমার বাবা রিক্সাচালক মোছলেম গাজী জানান, আমি গরিব অসহায় মানুষ। যখন যেটা পারি আমি আমার মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার কাছে বেশী দাবী করলে আমি কীভাবে দেব। আর এর জন্য হোচেন আমার মেয়েকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমি মেয়ের অসুস্থতার কথা শুনে হাসপাতালে এসে দেখি মেয়ের দিকে তাকানো যায় না। নাতিটা শুধু কান্না করে। আমি ঔষধপত্র ও চিকিৎসা খরচ চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার মেয়ের জামাই হাসপাতালে দেখতেও আসে নাই। আমি সকলের কাছে এর বিচার চাই। এ বিষয়ে ফাতেমার মা রিনা বেগম জানান, আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য প্রায়ই মারধর করে। আমি মেয়ের সুখের জন্য মেয়ের জামাইকে গরু দিয়েছি, গাড়ির জন্য টাকা দিয়েছি। তারপরও জামাই মন ভরাতে পারি নাই। মেয়ের জামাই এখনও যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে মারধর করতে থাকে। এ বিষয়ে হোচেন হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে একটু কথাকাটাকাটি হয়েছে। এছাড়া কিছু হয়নি বলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।এ বিষয়ে গোলখালীইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, বিষয়টি শুনেছি। দু’পক্ষকে ডেকে মীমাংসার ব্যবস্থা করব। গলাচিপা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু বলেন, আমার ইউনিয়নে কোন মানুষের উপর নির্যাতন হবে এটা হতে দেয়া যাবে না। মোছলেম গরিব মানুষ ওর সাথে এরকম হবে বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। আমি মোছলেমকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করব।গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদাউস আলম খান বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ বিষয়ে মোসলেম গাজী সোমবার বিকালে থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান।

 

 

 

এসডি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৫:৩৭ ● ১৪০ বার পঠিত