বৃহস্পতিবার ● ২৭ নভেম্বর ২০২৫
মহিপুরে বিক্রিত জমি জবরদখলের অভিযোগ, ভোগান্তিতে ক্রেতা
হোম পেজ » কুয়াকাটা » মহিপুরে বিক্রিত জমি জবরদখলের অভিযোগ, ভোগান্তিতে ক্রেতা
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর মহিপুরে বিক্রিত জমির দলিল না দিয়ে উল্টো সেই জমি জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন মোনোয়ারা বেগম হ্যাপি ও তাঁর ভাই হানিফ মেম্বার-এমন অভিযোগ তুলেছেন ক্রেতা শ্যামলী বেগম। প্রায় ১২ বছর ধরে জমির দখলে থাকা এই নারী বর্তমানে নানা হুমকি-ধমকি ও হয়রানির কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মহিপুর থানার মৎস্যবন্দর সংলগ্ন আলিপুরের থ্রি-পয়েন্ট এলাকায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১১ জুলাই আলীপুরের লতাচাপলী মৌজার (জেএল নং–৩৪) এসএ ৯৫৯ খতিয়ানভুক্ত ৯২৫সহ কয়েকটি দাগের মোট ৫ শতাংশ জমি ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন মোনোয়ারা বেগম হ্যাপি। এ সময় ক্রেতা শ্যামলী বেগম নগদ ৪ লাখ টাকা বায়না প্রদান করে ৩০০ টাকার নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হাত-বায়না চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। জমিটির দখলও তখনই বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
পর্যটন নগরী কুয়াকাটাসহ আশপাশের পাঁচটি মৌজার জমি বিক্রি করতে বিভাগীয় কমিশনারের পারমিশন প্রয়োজন হয়। পারমিশন না পাওয়ায় দলিল সম্পাদন দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে। এর মধ্যেই পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় উন্নয়নকাজ ও জমির মূল্য কয়েকগুণ বেড়ে গেলে বিক্রেতা হ্যাপির মনোভাব পরিবর্তন হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শ্যামলী। তাঁর দাবি, বছরের পর বছর নানা অজুহাতে দলিল না দিয়ে তাঁকে হয়রানি করে আসছেন হ্যাপি।
ভুক্তভোগী শ্যামলী বেগম বলেন, ১২-১৩ বছর আগে জমি কিনে ভোগদখলে আছি। কিন্তু কিছুদিন আগে এলাকাজুড়ে বালু ভরাট করায় আমার ঘর নিচু হয়ে যায়। ঘরের ভিটা উঁচু করতে শুরু করলে হ্যাপি আর তার ভাই হানিফ মেম্বার লাঠিয়াল নিয়ে এসে বাধা দেয় এবং আমার আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলে। আমাকে অপমান করে, অশ্লীল গালিগালাজ করে, এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।
তিনি আরও জানান, এসব নির্যাতন থেকে বাঁচতে বিভিন্ন মানুষের দ্বারস্থ হন। পরে লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করলে তিনি উপস্থিত থাকলেও বিবাদী হ্যাপি একবারও হাজির হননি।
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, শ্যামলীর অভিযোগের পর বিবাদীপক্ষকে তিনবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা গ্রাম্য আদালতের প্রতি অসম্মান দেখিয়ে হাজির হয়নি। শ্যামলীর কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়-২০১৩ সালে তিনি হ্যাপির কাছ থেকে জমির হাতবায়না নিয়েছেন এবং হ্যাপিকে দখলও বুজিয়ে দিয়েছেন। পারমিশন মিললে দলিল দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো কেন দেওয়া হয়নি তা রহস্যজনক।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বিক্রেতা মোনোয়ারা বেগম হ্যাপি বলেন, শ্যামলী বেগম আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। পরে এখন দাবি করছেন যে তিনি নাকি জমি কিনেছেন।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এসপি অফিসের মাধ্যমে অভিযোগ এসেছে। উভয়পক্ষকে কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলা হয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জমি জবরদখলের আশঙ্কা, হুমকি-ধমকি এবং দীর্ঘদিন দলিল না পাওয়াসহ বিভিন্ন হয়রানির কারণে বর্তমানে শ্যামলী বেগম চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। ন্যায় বিচারের আশায় তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এমবি/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৪:৩৫ ● ৩৬ বার পঠিত
