সাগরকন্যা প্রতিবেদক, ছাতক (সুনামগঞ্জ)

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে ফের পুশইনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোররাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তিনটি পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে সীমান্ত পার করে দেয়। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের আটক করে ছাতক থানায় হস্তান্তর করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান আকন্দ।

আটক ব্যক্তিদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছেন ছাতকের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম। তাদেরকে উত্তর খুরমা ইউনিয়নের জাহান আরা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে, যেখানে থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা ও পোশাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সন্ধ্যায় ইউএনও নিজেই আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেন এবং সহায়তা পৌঁছে দেন।

আটককৃতরা হলেন:

• ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম: জয়নাল আবেদীন (৫৫), তার স্ত্রী জাহেরা বিবি (৩৬) ও মনোয়ারা বিবি (৩৩), ছেলে মজিদুল ইসলাম (১৮), আশিদুল হক (১৫), আব্দুল্লাহ (৫), ইসমাইল (২); মেয়ে আকলিমা খাতুন (১৪), জামিলা (১৩), জান্নাতি (১০), সুমাইয়া (১০); মজিদুলের স্ত্রী রেহেনা বিবি (১৮)।

• বড় ভিটা, কুড়িগ্রাম: নজির হোসাইন (৮০), স্ত্রী মোমেনা বেগম (৭৪), ছেলে মো. মমিনুল (৩২), পুত্রবধূ মোছাঃ আমিনা (২৮), নাতি মাসুদ (১৬), আল আমিন (৭), নাতনী মোছাঃ মনিশা (৫)।

• ভেড়ামারা, পাবনা: জান্নাতুল ফেরদৌস (২০), পিতা আব্দুর রাজ্জাক।

এর আগেও একই সীমান্ত দিয়ে একাধিকবার পুশইন ঘটেছে।

• ১২ জুন: নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে ৫ পুরুষ, ৪ নারী, ৮ শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে পুশইন করে বিএসএফ।

•  

  ২৮ মে: ছনবাড়ী সীমান্ত দিয়ে কুড়িগ্রামের ৫টি পরিবারের ৫ পুরুষ, ৫ নারী, ৪ ছেলে, ২ মেয়েসহ ১৬ জনকে পুশইন করা হয়।

  ৩০ মে ইউএনও মো. তরিকুল ইসলাম আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে তাদের সহায়তা দেন এবং ৩১ মে কুড়িগ্রাম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় উপজেলা প্রশাসন প্রত্যেক পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়।

ইউএনও মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “পুশইন হয়ে আসা নাগরিকদের মানবিক দিক বিবেচনায় থেকে আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা ও পোশাকসহ সবধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা দ্রুত স্বজনদের কাছে ফিরতে পারে, সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

এএমএল/এমআর