বৃহস্পতিবার ● ১৭ জুলাই ২০২৫

কলাপাড়া-মহিপুর ও কুয়াকাটায় মাদকে ছয়লাব; উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

হোম পেজ » লিড নিউজ » কলাপাড়া-মহিপুর ও কুয়াকাটায় মাদকে ছয়লাব; উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা
বৃহস্পতিবার ● ১৭ জুলাই ২০২৫


অভিযানে ৮ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) ও ৭৩ পিস ইয়াবাসহ চারজনকে আটক করা হয়।

সাগরকন্যা নিজস্ব প্রতিবেদক

 

কলাপাড়া-মহিপুর ও কুয়াকাটায় অবাধে ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল ও চোলাই মদের মতো নিষিদ্ধ মাদক। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে হাত বাড়ালেই মিলছে এসব মাদক। মাদক বহনে ব্যবহার করা হচ্ছে কিশোর-কিশোরী ও নারীদেরও।

 

স্থানীয়রা জানান, একটি শক্তিশালী চক্র অভিনব কৌশলে মাদকের রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট চক্রের সদস্যদের দু’একজনকে গ্রেফতার করলেও মাদকের বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না।

 

চলতি মাসের শুরুর দিকে কুয়াকাটায় প্রথমবারের মতো ইয়াবার কাঁচামাল ‘ক্রিস্টাল আইচ’সহ চার যুবককে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এর তিনদিন পর ৭ জুলাই মহিপুর বাজার থেকে ৬৪০ পিস ইয়াবাসহ যুবককে আটক করে মহিপুর থানা পুলিশ।

 

এদিকে মাদকসেবীর ভাষ্যমতে, সোর্স পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি নিয়মিত টাকা ও মাদক নিচ্ছেন মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা অবৈধ সুবিধাভোগীদের কারণে  অভিযানের তথ্য আগেই ফাঁস হয়ে যায়। ফলে প্রশাসনের অধিকাংশ অভিযান ব্যর্থ হচ্ছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোপন তথ্যে জানা গেছে, ইয়াবার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা কুয়াকাটাসহ পুরো কলাপাড়া উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। একেক পিস ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়। টেকনাফ থেকে সমুদ্রপথে মিয়ানমারের চালান আমদানির পাশপাশি সড়ক পথে বিভিন্ন পরিবহনেও ঢুকছে মাদক। এদের হাত হয়ে খুচরা বাজারে চালান সরবরাহ করতে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও নারীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কারণে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ শঙ্কিত রয়েছেন।

 

এদিকে, গাঁজা সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। ছোট প্যাকেটের গাঁজা বিক্রি হচ্ছে ১০০-২০০ টাকায়। বেকার শ্রেণির নানা বয়সী পুরুষ মানুষের মধ্যে মাদক গ্রহণের প্রবণতা বাড়ায় এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও দাবি এলাকার সচেতন মানুষের।

 

তাঁরা বলছেন, মাদকের বিস্তারে যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারে নেমে এসেছে অশান্তি ও দেখা দিয়েছে সামাজিক অবক্ষয়।

 

সদ্য যোগদানকৃত মহিপুর থানার ওসি মোঃ মাহমুদ হাসান মাদকের ভয়াবহতা রোধ করা প্রসঙ্গে বলেন, ইতোমধ্যে থানার অফিসারদের সাথে বসেছি। মাদককারবারীদের ধরতে নতুন করে সোর্স নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আগের যেকোন সময়ের চাইতে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবো।

 

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমরা মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছি। সোর্সদের কার্যক্রমের ওপর বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে।

 

অভিজ্ঞমহলের মতে, নিয়মিত অভিযান জোরদার ও মাদক ব্যবসায়ীদের পেছনে থাকা সুবিধাভোগীদের আইনের আওতায় আনতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৪০:৫৩ ● ১২৭ বার পঠিত