কলাপাড়ায় অনলাইনে উদ্ভিদ বিক্রি করে সফলতা

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় অনলাইনে উদ্ভিদ বিক্রি করে সফলতা
শুক্রবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১


---

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের খাপড়াভাঙ্গা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া গত ২ বছর ধরে ক্যাকটাস, স্যাকল্যন্ড ও হয়য়া জাতীয় বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদের চারা তার বাগানে উৎপাদন করে অনলাইনে প্রচার চালিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছেন। কলাপাড়ায় চলমান একমাত্র কুরিয়ার সার্ভিসটি ভারী মালামাল পরিবহন করতে পারছে না। জেলা শহরে গিয়ে পরিবহন করতে হয় বলে তাতে অনেক খরচ। কলাপাড়া দিয়ে যদি পরিবহন করতে পারত তা হলে ভাল লাভবান হত বলে দাবি এ উদ্ভিদ ব্যবসায়ীর। তিনি অনলাইনের ব্যবসা করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান ও মৎস্য খামার করে পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে প্রচুর পরিমান লাভবান হচ্ছেন।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভুইয়া কৃষি ফার্ম বাড়ির সামনে মাত্র এক শতাংশ জায়গায় বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদের বীজ সংগ্রহ করে এবং উর্বর মাটি প্রস্তুত করে প্লস্টিকের বালতি, গ্লাস, মগি, বোতল, মাটির টপ, কাঠের বক্সসহ বিভিন্ন প্রকার পাত্রে উর্বর মাটি দিয়ে বীজ বপণ করে চারা উৎপাদন করে তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেন থাকেন। প্রতি মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। ইটালি ও চায়না থেকে ক্যাকটাস, স্যাকল্যান্ড ও হয়য়া জাতীয় বীজ সংগ্রহ করে তার বাগানে স্টিন অফ টিয়ার, স্টিন অফ ব্যানানা, ক্যালানচো, রবি ন্যাকলেচ, মসরোজ, পর্তুলিকা, গ্লেজি, সিডাম ম্যকোনই, ল্যামন সিডামসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদের চারা উৎপাদন করেন। চারাগুলো কুরিয়ারযোগে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। কলাপাড়ায় একমাত্র সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস আছে। তাতে ভাড়ী মাল পরিবহনের ব্যাবস্থা না থাকায় পটুয়াখালী জেলা সদরে গিয়ে মাল পাঠাতে হয়। এতে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ঠিকমত গ্রহকদের কাছে পাঠানো যাচ্ছে না। যদি কলাপাড়া দিয়ে কুরিয়ার করতে পারত তা হলে অনেক লাভবান হতো বলে দাবি মোস্তাফিজুর রহমানের। তিনি অনলাইনের ব্যবসা করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান ও মৎস্য খামার করে সফলতার ছোঁয়া পেয়েছেন। দেশ ও বিদেশ থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজ বাড়িতে  ২ একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছ রোপন করে সফলতা পেয়েছেন। এখন তার ফল বাগানে ড্রাগন, বাড়িমাল্টা ওয়ান, কাশমেরি কমলা, থাই কাটিমুণ আম, গৌরমতি আম, অ¯্রপালি আম, হিমসাগর আম, হাড়িভাঙ্গা আম, লিচু, লেবু, নারিকেল, বল সুন্দরি বড়ই, কাঠাল, আমলকী, পেয়ারাসহ ২৫ প্রজাতির ফল রয়েছে। ফল বাগান দিয়ে প্রতি বছর পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি করেন। সাগর ও বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে মাছের পোনা সংগ্রহ করে ৪ একর জমি নিয়ে ভুইয়া মৎস্য খামারে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে ভাল লাভবান হচ্ছেন তিনি। তার খামারে গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি, কোড়াল, রুই, কাতল, তেলাপিয়া, মৃগেল সহ অনেক প্রকার মাছ রয়েছে। তিনি প্রতি বছর মৎস্য খামার থেকে চার লক্ষ টাকা মাছ বিক্রি করেন।
ভুইয়া কৃষি ফার্মের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া সাগরকন্যাকে বলেন, আমার অনলাইন পন্য কলাপাড়া থেকে কুরিয়ার করতে পারলে অনেক লাভবান হতাম এবং উন্নত প্রশিক্ষণ ও  সরকারি সহায়তা পেলে ভুইয়া কৃষি ফার্ম ও মৎস্য খামার ব্যাপক আকারে করতে পারতাম।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.আর.এম.সাইফুললাহ বলেন, কলাপাড়ার সমস্ত বাগান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিবির পর্যবেক্ষনে রয়েছে, উক্ত বাগানের মানউন্নয়ন ও বাণিজ্যিকী করনে আরও উন্নতর প্রশিক্ষণ এবং কারিগরি সহযোগিতা প্রয়োজন, আমরা খুব দ্রুত সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা  অপু সাহা বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যদি তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন তাহলে আমরা উন্নতর প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪১:১৫ ● ৫৫২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ