সরবরাহ না থাকায় কলাপাড়ায় সার সঙ্কটে দিশেহারা কৃষক

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » সরবরাহ না থাকায় কলাপাড়ায় সার সঙ্কটে দিশেহারা কৃষক
শুক্রবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১


প্রতীকী ছবি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
কলাপাড়ায় চলমান আমন মৌসুমে সার সরবরাহে চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে সরবরাহ প্রতিবন্ধকতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বিসিআইসি ডিলারসহ ভূক্তভোগী চাষীরা। গত ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাট্রিজ কর্পোরেশন বিসিআইসি ভবন থেকে স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে পটুয়াখালীর লাউকাঠিতে একমাত্র সার গুদাম স্থানান্তরের সিন্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে গত ২৪ অক্টোবর সর্বশেষ সার সরবরাহ শেষে এ গুদামের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আর এতেই বিপাকে পড়েছেন কলাপাড়া উপজেলার সার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠনাসহ প্রান্তিক কৃষকরা।
সরেজমিনে জানা যায়, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসেসিয়োশন বাফার পটুয়াখালী গুদাম থেকে সার সরবরাহ বন্ধের পর বরিশাল কেডিসি সার গুদাম থেকে এ উপজেলায় সরবরাহে চরম প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। ভূক্তভোগী ডিলারদের অভিযোগ, দিনের পর দিন ঘাটে ট্রাক কিংবা ট্রলার রেখেও সার পাচ্ছেন না তারা। ফলে প্রতিদিন লোকশান গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে কলাপাড়া উপজেলায় সরকারীভাবে ১২’শ ২৪ মেট্রিক টন সার পাওয়ার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিলাররা সার বরাদ্দ পেয়েছেন মাত্র ৪০ টন। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সার পৌঁছাতে বস্তা প্রতি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া ৩৫ টাকা। এমনকি গত কয়েকমাস মাস ধরে বরাদ্দ পেতে টাকা জমা দেয়ার পরেও সঠিক সময়ে সার পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন অনেক বিসিআইসি ডিলাররা। উপজেলার লতাচাপলী ইউপির আছালত খাঁ গ্রামের কৃষক মাসুম বিল্লাহ সাগরকন্যাকে জানান, তিনি প্রায় নয় একর জমিতে আমনের চাষ করেছেন। কিন্তু গত একমাস ধরে তিনি সার কিনতে পারছেন না। ফলে তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। লতাচাপলী ইউপির বিসিআইসি ডিলার রুহুল আমিন জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর টাকা জমা দিলেও বরিশাল থেকে তারা এখনও সার পায়নি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, পটুয়াখালী থেকে সার গোডাউন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলেই তারা এমন বিপদে পরেছেন। বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসেসিয়োশন কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কলাপাড়া পৌর শহরের বিসিআইসি ডিলার খাঁন ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী মো. জাকির হোসেন বলেন, পটুয়াখালীর গুদাম ঘর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের সার সরবরাহ পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি মাসের পর মাস বরিশাল ঘাটে এসে থাকতে হচ্ছে আমাদের। প্রতিদিন দুই হাজার টাকারও বেশি লোকশান দিয়েও সরবরাহ প্রতিবন্ধকতায় আমরা সার পাচ্ছি না। ফলে প্রান্তিক চাষিসহ সাব ডিলারদের মাঝেও এর প্রভাব পড়েছে।
পটুয়াখালী শাখার বাফার ব্যবস্থাপক (বানিজ্যিক)  মশিউর ইসলাম  জানান, লাউকাঠি গুদাম ঘরটির ছাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গুদাম ক্লোজ করা হয়েছে। তবে নতুন করে গুদাম ঘর স্থাপন করা হবে বলে উর্ধ্বতন মহলে সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। সেই লক্ষে জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া চলমান আছে। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, সেপ্টেম্বর মাসে কলাপাড়ায় ১২’শ ২৪ মেট্রিকটন সার পাওয়ার কথা থকালেও তারা এখনও তা পায়নি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সার সরবরাহে তাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বরিশাল বাফার গুদাম ইনচার্জ আবদুর রহিম খন্দকার বলেন, পটুয়াখালী গুদাম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বরিশাল থেকে সার সরবরাহ করা হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়ায় লেবার ম্যানেজে আমাদের একটু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিলো। তার পরেও সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা প্রতিদিন ৫’শ মেট্রিকটন সার সরবরাহ করছি। আশা করছি কলাপাড়া উপজেলায় প্রতি মাসের সার পৌঁছে দিতে পারবো। আমরা সেই লক্ষ্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৬:৩৯ ● ৩২৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ