নেছারাবাদে ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই!

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » নেছারাবাদে ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই!
শুক্রবার ● ১৪ মে ২০২১


নেছারাবাদে ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই!

নেছারাবাদ(পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আমি ২৫ বছর ধরে মাংস বিক্রয়ের কাজ করি। আমি কোনোদিন দেখিনি উপজেলা থেকে কোনো ডাক্তার এসে জবেহর জন্য আনা গরু বা ছাগল রোগমুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করেছে। আমাদেরকে নেছারাবাদ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে নির্দেশনা দেয়া আছে গরু বা ছাগল  জবেহর ২৪ ঘন্টা পূর্বে পরীক্ষা করানোর জন্য। কিন্ত একটি গরু নিয়ে সন্ধ্যা নদী পার হয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যেতে আসতে প্রায় ৫শত টাকা খরচ হয়। কিন্ত দেখা যায় এটাকা একটা গরুর মাংশ বিক্রি করে অনেক সময় আমরা মুনাফাও করতে পারিনা। এসব কারনেই পশু নিয়ে উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসে যাওয়া হয়না। কথাগুলো বলছিলেন নেছারাবাদের সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ের মাংস বিক্রেতা মো. খাইরুল। তিনি আরো বলেন বর্তমানে হুজুর দিয়ে কোনো পশু জবেহ করা হয়না। অজু করে আল্লাহু আকবার বলে      নিজেরাই পশু জবাই করি।
সন্ধ্যা নদী বিধৌত নেছারাবাদের পশ্চিম পাড়ে ৯ জন গরুর মাংস ও ৪ জন ছাগলের মাংস বিক্রেতা রয়েছে। এছারা নদীর পূর্ব পাড়ে উপজেলা পশু অফিস ও থানা সংলগ্ন এলাকায় ৬ জন গরুর মাংস এবং ২ জন লাইসেন্সকৃত ছাগলের মাংস বিক্রেতা রয়েছে। এদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নেছারাবাদে প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ টি গরু ও ৫/৬ টি ছাগলের মাংস বিক্রি হয়। মাংস বিক্রয় ও প্রক্রিয়াজাতকরন বিধিমালা ২০১১ আইনে এসব গরু ও ছাগল জবাই করার পূর্বে উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসের ডাক্তার দিয়ে পশু রোগাক্রান্ত বা গর্বাবস্থায় আছে কিনা তা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও কোনোদিনই এ নিয়ম পালন হয়নি  বলে জানান একাধিক মাংস বিক্রেতা।
মাংস বিক্রেতা রুবেল বলেন, ঈদ উপলক্ষে নেছারাবাদে প্রায় ৩শত গরু ও ২০/২৫ টি ছাগলের মাংসের চাহিদা থাকে। এর কোনোটিই কখনই জবহের পূর্বে বা পরে পরীক্ষা করা হয়না। যারা ডিজিটাল পালা ব্যবহার করেনা তাদের ওজনে কিছুটা তারতম্য হতে পারে।  তবে রোগাক্রান্ত গরু মিয়ারহাটে জবাই করা হয়না।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ শওকত আলী বলেন, পূর্বে কি হয়েছে জানিনা। তবে আমি এখানে যোগদানের পর মাংস বিক্রেতাদের নিয়ে একাধিকবার ওয়ার্কসপের আয়োজন করেছি। ওয়ার্কসপে তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের ধারণা দেয়া হয়েছে। এসময় বার বার তাদেরকে পশু জবাইয়ের আগে অফিস থেকে রোগমুক্ত ছারপত্র নেয়ার জন্য বলা  হয়েছে। কয়েকটি পশু নিয়ে কয়েকদিনই কয়েকজনে ছারপত্র নিয়েছে। কিন্ত এর পর আর কেহ আসেনা। তবে নদীর পশ্চিম পাড়ের মিয়ারহাট ও ইন্দুরহাট থেকে কেহই আসেনা। এ কর্মকর্তা আরো বলেন অফিসে লোক সল্পতা ও যাতায়াত সমস্যার কারনে জবহের জন্য আনা পশু যাচাই করা হয়না। তবে কেহ নিয়ে আসলে আমরা বিনা ফিতে তা পরীক্ষা করে ছারপত্র দেই।
এদিকে একাধিক মাংস ক্রেতা অভিযোগ করেন, এ অঞ্চলে ভোক্তাদেরকে মাংস ওজনে ঠিক ভাবে দেয়া হয়না। এমনকি রোগাক্রান্ত গরু ও ছাগল এখানে জবেহ করা অনেকটাই ওপেন সিক্রেট।

আরএ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:২০:২৫ ● ১৬৬৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ