আমতলীতে হতদরিদ্রের ঘর বরাদ্দে অনিয়ম, অভিযুক্ত কর্মচারীকে বরখাস্ত!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে হতদরিদ্রের ঘর বরাদ্দে অনিয়ম, অভিযুক্ত কর্মচারীকে বরখাস্ত!
শনিবার ● ৮ মে ২০২১


আমতলীতে হতদরিদ্রের ঘর বরাদ্দে অনিয়ম, অভিযুক্ত কর্মচারীকে বরখাস্ত!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

 

মুজিববর্ষ উপলক্ষে হতদরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ঘর বরাদ্দে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসের বিতর্কিত দুর্ণীতিবাজ সেই কর্মচারী মোঃ এনামুল হক বাদশাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বুধবার তাকে এ বরখাস্তের আদেশ দেন। এনামুল হক বাদশাকে বরখাস্তের খবরে শনিবার তার গ্রামের বাড়ী গুলিশাখালী ও হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
জানাগেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এ অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩’শ ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রকল্পের গুলিশাখালী ইউনিয়নে ১১০ টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান। ওই ইউনিয়নে ঘর বরাদ্দের তালিকা এখনো দৃশ্যমান নয়। অভিযোগ রয়েছে এনামুল হক বাদশা ও ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান যোগসাজশে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে ইউনিয়ন ভিত্তিক বরাদ্দের চেয়ে ওই ইউনিয়নে দ্বিগুন বরাদ্দ দেন। ঘর বরাদ্দে অনিয়ম ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গত বুধবার বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান আমতলী ইউএনও অফিসের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশা সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল তাকে একই ঘটনায় বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসে একই পদে বদলি করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক। এনামুল হক বাদশাকে সাময়ীক বরখাস্তের খবরে শনিবার তার গ্রামের বাড়ী গুলিশাখালী ও হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকায় মিষ্টি বিতরন করা হয়েছে।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন মৃধা জানান, এনামুলকে সাময়িক বরখাস্তের খবরে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। মানুষ খুবই আনন্দিত। সকলেই এনামুলের এমন শাস্তি দাবী করেছেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগে এনামুল হক বাদশাকে সাময়ীক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এ অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩’শ ৫০ টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রকল্পের গুলিশাখালী ইউনিয়নে ১১০ টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান। ওই ইউনিয়নে ঘর বরাদ্দের তালিকা এখনো দৃশ্যমান নয়। ওই ঘরগুলোর মধ্যে ইউএনও কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশার নিজ গ্রাম হরিদ্রবাড়িয়ায় ৩০টি ঘর দেয়া হয়। তার মধ্যে ১৪ টি ঘর পেয়েছেন মোঃ এনামুল হক বাদশার আত্মীয়-স্বজন। তারা সকলেই ধনাট্য ব্যাক্তি এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। ইউএনও ও তার অফিসের কর্মচারী এনামুল হক বাদশা ঘরের তালিকা তৈরি ও ঘরপ্রতি ২০ হাজার টাকা নিয়ে ঘর দেয়ার অভিযোগ এনে গত ২২ এপ্রিল গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামাল রাঢ়ী বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথ্য তুলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ও তার অফিসের কর্মচারী মোঃ এনামুল হক বাদশা। গত ২৪ এপিল রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ইউএনও’র নির্দেশে এনামুল হক বাদশার নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী সুজন মুসুল্লী ও হাবীব গাজীসহ ৫-৬ জনে যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ীকে তার বাড়ী থেকে তুলে আনেন । সাড়ে চার ঘন্টা তাকে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখায় বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া অভিযোগ তুলে নিতে বলেন এমন অভিযোগ যুবলীগ নেতা কামালের। পরে সন্ত্রাসীরা রাত সাড়ে বারটার দিকে যুবলীগ নেতাকে ইউএনও আসাদুজ্জামানের বাসায় নিয়ে আসে। তার বাসায় ইউএনও যুবলীগ নেতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা ইচ্ছামত ভিডিও ধারন করেন বলে জানান যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ী। রাত দেরটার দিকে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান তাকে ছেড়ে দেন। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন কামাল রাঢ়ীকে অপহরণের পর থেকে ইউএনও সন্ত্রাসী সুজন মুসুল্লী, হাবীব গাজী, এনামুল ও তার ভাই আব্দুল মতিন এলাকার লোকজনকে ভয়ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছেন। সন্ত্রাসী সুজন মুসুল্লীর অব্যহত হুমকিতে এলাকার মানুষ দিশেহারা। এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল রাতে ইউএনও’র পালিত সন্ত্রাসী সুজন মুসুল্লীকে প্রধান, তার অফিসের বিতর্কিত কর্মচারী এনামুল হক বাদশা ও হাবিব গাজীসহ ৪জনকে আসামী করে অপহৃত মোঃ কামাল রাঢ়ী অপহরণ মামলা করে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৬:৪৪ ● ৮০৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ